সম্পাদকীয়
রাজনীতিতে সুবাতাস
পালে হাওয়া লাগলে নৌকা তরতর গতিতে এগিয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে পাল যদি নির্বাচনের হয়, তখন? তখনো এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। আর বাতাস যদি সুবাতাস হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পালে যে বাতাস লেগেছে তাকে সুবাতাস বললে বেশি বলা হবে না। অন্তত মিডিয়া আমাদের সে তথ্য দিয়ে আশ্বস্ত করেছে।
তাদের ভাষ্য মতে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুনরায় সদিচ্ছা প্রকাশ নির্বাচনী রাজনীতিতে আশার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এর মধ্যদিয়ে সব দলকে নিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার যে এখনো আশাবাদী—তার একটা আভাস মিলল। এছাড়া আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পথ বের করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আশ্বাস বিষয়টিকে আরও বেগবান করেছে। পাশাপাশি বিএনপির মনোভাবও ইতিবাচক। বিশেষ করে গত রোববার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটি আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে কিছুটা আশাবাদী হয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে আয়োজিত সংলাপের শেষ পর্যায়ে এসে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আশাবাদী হয়ে উঠেছে। স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। তিনি আরও বলেছেন, বর্তমান ইসির প্রতি বিএনপির আস্থা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছাই যথেষ্ট।
এদিকে নির্বাচন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে এতদিন ধরে চলে আসা দ্বন্দ্বের কোনো সুরাহা না হলেও বাতাস কিছুটা হলেও নির্বাচনমুখী। গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসির নির্বাচনী ভাবনা নির্বাচনী রাজনীতিতে কিছুটা হলেও আস্থা এনেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ বের করতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ও ইসির সঙ্গে সংলাপে বিএনপির আশাবাদ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথকে পরিশীলিত করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে আলোচনার যে ইঙ্গিত ফুটে উঠেছে তা সবার জন্য ইতিবাচক। তবে পরস্পরের প্রতি আস্থা এখনো সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হয়েছে—এমনটাও বলা যাবে না। পরিশেষে বলতে হয়, সাধারণ মানুষ একটি সুন্দর সমাধানের প্রত্যাশায় রাজনীতিকদের দিকে তাকিয়ে আছে এবং আমরাও এর ব্যতিক্রম নই।
পিডিএসও/হেলাল