মাওলানা মাসউদুল কাদির
জুমাতুল বিদা আজ
আল জুমাতুল মানে শুক্রবার বা জুমাবার। জুমার নামাজ জামাতের সঙ্গে একত্র হয়ে মসজিদে পড়া অত্যাবশ্যকীয় করা হয়েছে। আর ওয়াদা শব্দের অর্থ হলো বিদায় বা বিদায়ী শুভেচ্ছা। ওয়াদা শব্দের বাংলা উচ্চারণ আল বিদা। আমরা সাধারণত কাউকে বিদায় জানাতে আল বিদাও বলে থাকি। রমজানের শেষ জুমা যেহেতু বিদায়ী জুমা তাই এটিকে জুমাতুল বিদা বলে।
পবিত্র রমজানের প্রতিটি দিনক্ষণই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে নিশ্চয়ই শুক্রবার মুসলিম জাতির কাছে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। অন্যান্য সাধারণ দিবসের মতো এ দিবস নয়। লাইলাতুল কদর যেমন হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, তেমনিভাবে প্রতিটি জুমুাও অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। রমজানের শেষ জুমা তো একটি বছরের জন্য আর পাওয়া যাবে না। তাই মুমিন রমজানের শেষ জুমায় আমলে তৎপর হয়ে উঠে।
পবিত্র কোরআনে শুক্রবারের নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়ে সব মুসলমানকে এ দিন একত্র হয়ে জুমার নামাজ আদায়ের তাগিদ প্রদান করে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (সুরা আল জুমা : আয়াত ৯)।’
তাই স্বাভাবিকভাবেই এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। আর রমজানে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রমজানের প্রতিটি জুমাই মুমিন অনেক আড়ম্বরতার সঙ্গে উদযাপন করে, পালন করে। নিজেকে পাক-সাফ করে নিতে নিরন্তর প্রয়াস চালায়। কারণ হজরত মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে মুসলমান রমজান মাস পেল, কিন্তু সারা বছরের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারল না, তার মতো হতভাগা আর নেই।’ (ইবনে মাজা)।
বান্দার আকুতি থাকে অন্তত রমজানের শেষ ফজিলতপূর্ণ জুমায় নিজেকে পবিত্র করে নিতে। দয়া, ক্ষমা ও মুক্তি লাভের আশায় জুমার দিনে আরো বেশি ইবাদতে মগ্ন হয় মুমিন।
তাই রমজানের শেষ জুমা মুসলিম বিশ্বে অনেক তাৎপর্য নিয়ে আসে। মানুষকে ইবাদতে আরো অনুপ্রাণিত করে। বান্দা নিজেকে ভিন্ন এক প্রস্তুতিকল্পে আল্লাহর দরবারে পেশ করে। মসজিদ মুমিনের কলরবে টইটুম্বুর হয়ে যায়। আল্লাহতায়ালা আমাদের শেষ জুমার তাৎপর্য গ্রহণ করার তৌফিক দিন। আমিন।
লেখক : সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক