মাওলানা মাসউদুল কাদির

  ১৮ মে, ২০২০

সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব

সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। এ সদকায় রোজার বিভিন্ন ত্রুটিবিচ্যুতিরও ক্ষতিপূরণ হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন। অর্থহীন, অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য। (সুনানে আবু দাউদ ১/২২৭)।

তিনটি শর্ত যার মধ্যে পাওয়া যাবে তার ওপরই সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব। এক. মুসলমান হওয়া। দুই. স্বাধীন হওয়া। তিন. ঋণমুক্ত হওয়া এবং তার ও তার পরিবার-পরিজনের নিত্যপ্রয়োজনীয় সম্পদের উদ্বৃত্ত হয়ে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে।

মানুষের বাসগৃহ, গৃহের আসবাবপত্র, পোশাক-পরিচ্ছদ, যানবাহন ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অন্তর্ভুক্ত। সদকায়ে ফিতরের জন্য পূর্ণ বছর নেসাব পরিমাণ মালিক হওয়ার প্রয়োজন নেই। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি শিশু, পাগলও তার ওপরও সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

এই সদকার পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস ও সুন্নাহয় দুটি মাপকাঠি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে ‘সা’ ও ‘নিসফে সা’। এক ‘সা’-এর পরিমাণ হলো ৩ কেজি ১৮৩ গ্রাম। আর ‘আধা সা’-এর পরিমাণ ১ কেজি ৫৯১.৫ গ্রাম। যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক ‘সা’ এবং গম দ্বারা আদায় করলে ‘নিসফে সা’ প্রযোজ্য হবে।

এই খাদ্যদ্রব্যের বদলে অর্থ আদায় করার মাধ্যমেও সদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে। শরিয়ত নির্ধারিত ‘সা’ অথবা ‘নিসফে সা’-এর বাজারমূল্য করলেও সদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে।

সদকাতুল ফিতর আদায়ের সামর্থ্যবানদের সতর্কভাবে আদায় করা উচিত। শরিয়ত নির্ধারিত জিনিসগুলোর দাম এক রকম নয়। তাই সামর্থ্যানুযায়ী বেশি দামের খাদ্যবস্তুকে মাপকাঠি ধরে সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম।

সদকাতুল ফিতর মূলত জাকাতেরই একটি প্রকার। কুরআনেও বান্দার প্রতি পবিত্র হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জাকাত বা সাদকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে বান্দা পবিত্রতা লাভ করে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে যে পবিত্রতা অর্জন করে।’ (সুরা আ’লা : আয়াত ১৪)।

বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য এবারের সদকাতুল ফিতর হিসেবে এ বছর সর্বনিম্ন ফিতরা জনপ্রতি ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৪৪১ হিজরি সনের সদকাতুল ফিতর নির্ধারণের লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এ বছরের ফিতরার এ হার নির্ধারণ করা হয়।

নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হলেও এই সদকাতুল ফিতর আদায় করা মুস্তাহাব। আল্লাহতায়ালা সদকাতুল ফিতর আদায় করে পুণ্যবান ও পবিত্র হওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক : সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

[email protected]

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফিতরা,সদকাতুল ফিতর,ওয়াজিব
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close