শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১৬ মার্চ, ২০২০

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য সেই চেয়ার!

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত একটি চেয়ার প্রায় ৫১ বছর ধরে যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের দুই সহোদর শাব্বির আহমেদ খান ও শাহবাজ খান সানি। শাহজাদপুর পৌর সদরের দ্বারিয়াপুর মহল্লার দুই সহোদর শাব্বির ও সানি জানান, তারা চেয়ারটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দিতে চান।

ঢাকাসহ দেশজুড়ে ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের ৬ দফা এবং পরে ১৯৬৯ সালে জানুয়ারিতে শুরু হওয়া ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার আন্দোলন পাকিস্তান শাসকের ভিত কাঁপিয়ে তোলে। এই উত্তাল আন্দোলনের মধ্যে ১৯৬৯ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলা ১৩৭৬-এর ১ বৈশাখ সোমবার প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় শাহজাদপুর। এতে অনেকেই হতাহত হয়। ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় তৎকালীন থানা ভবন, পোস্ট অফিস, ইউনিয়ন কাউন্সিলসহ অনেক স্থাপনা। খবর পেয়ে কয়েক দিন পর ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে শাহজাদপুরে ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নিজস্ব ফটোগ্রাফার বাদশা বঙ্গবন্ধুর ওই সফরের অনেক ছবি ক্যামেরাবন্দি করেন। এসব কথা জানান তৎকালীন শাহজাদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল লতিফ খানের জ্যেষ্ঠপুত্র শাব্বির আহমেদ খান।

শাব্বির আহমেদ খান জানান, বঙ্গবন্ধু শাহজাদপুরে এসে তাদের বাড়ির বৈঠকখানায় একটি চেয়ারে দীর্ঘ সময় ধরে বসেছিলেন। তিনি আরো জানান, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ওই চেয়ারটি তারা সযত্নে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘সে সময়কার শাহজাদপুরের ছাত্রনেতা আবদুল লতিফ মির্জা, মির্জা আবদুল বাকি, শাহিদুজ্জামান হেলাল, গোলাম মওলা আজম, আবদুল গফুর শরবত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমানসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওই দিন আমার বাবা বঙ্গবন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখান।’

পরে ওই দিন বঙ্গবন্ধু আমাদের দ্বারিয়াপুরের বাড়িতে আসেন। আমাদের বৈঠকখানায় বসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনের করণীয় সম্পর্কে আলোচনায় বসেন। এর আগে তিনি আমার শ্যালিকা মাজেদা লোদীর বাড়িতে দুপুরের আহার করেন। বঙ্গবন্ধুর শাহজাদপুরে আসার সঠিক তারিখটি আমার মনে নেই। তবে ওই দিন বঙ্গবন্ধু আমাদের বৈঠকখানায় যে চেয়ারটিতে বসেছিলেন ওই চেয়ারটি ৫১ বছর ধরে সযত্নে আগলে রেখেছি আমরা।’

ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে শাব্বির আরো বলেন, ‘আমার ছোট ভাই সানি তখন আড়াই বছরের। ওই চেয়ারটিতে বসেই সেদিন বঙ্গবন্ধু সানিকে কোলে নিয়ে আদর করেন। তাদের দুই ভাইয়ের আবেদন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত এই চেয়ারটি যেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাখা হয়।’

পিডিএসও/হেলাল​

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চেয়ার,বঙ্গবন্ধু,স্মৃতি,মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর,শাহজাদপুর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close