reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ আগস্ট, ২০১৯

নতুন ওষুধে সফল হোক মশক নিধন

প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সরকারি হিসাবে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ছুঁইছুঁই করছে। গত শনিবারও আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৪৯ জন। এই হিসাবে প্রতি ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। তবে বেসরকারি হিসাব মতে এ সংখ্যা ৬২ জন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রতিদিনই ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গড়ে প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে ৫০০। ১৭ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক হিসেবে বেশি। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের সময় ডেঙ্গু এক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামে যাবে। এদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিরাও থাকবেন। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এসব মানুষের উপস্থিতি ডেঙ্গুর ভাইরাস আরো ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে।

অনেক দেরিতে হলেও এসেছে মশক নিধনের নতুন ওষুধ। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে চীন থেকে নতুন ওষুধের নমুনা এনেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রাথমিক পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। পাশাপাশি ভারত থেকে এনেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ ওষুধ মাঠে নামার পর বোঝা যাবে এর কার্যকারিতা। তবে আমরা আশা করতেই পারি, এবার হয়তো নগরবাসীকে আশাহত করবে না উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কতটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে প্রাকৃতিক নিয়মেই এ রোগের আয়ুষ্কাল থাকে স্বল্প সময়ের জন্য। অনেকটা ঋতুচক্রের মতো। সেদিক বিবেচনায় ধরলে এডিস মশার যৌবনকাল এখন শেষপর্যায়ে। এ ছাড়া এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীর আয়ুষ্কাল মাত্র ৩০ দিন। এ ছাড়া ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আমরা কমবেশি অনেক কার্যক্রম উপস্থাপন করেছি। ব্যবস্থা নিয়েছি। সরকারও তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। এখনো করছে। তবে কথায় আছে, ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’। আমরা আশা করছি, শেষতক সরকারের কাছ থেকে একটা ভালো ফলাফল পাব। যে ফলাফলে আগামী বছর বাংলাদেশ ডেঙ্গুমুক্ত থাকবে। আর এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন হবে, ঢাকা মহানগরকে নদী ও খাল খাদকদের হাত থেকে রক্ষা করে তাদের পুরোনো অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া। এ প্রশ্নে সরকারকে অত্যন্ত কঠোর হতে হবে। কোনো ধরনের শৈথিল্য পরাজয় ডেকে আনতে বাধ্য।

আমাদের জানা মতে, বদ্ধ জলাশয়ই মশা উৎপাদনের কারখানা। সুতরাং এ কারখানা ধ্বংস করাই হবে মশক নিধনের প্রধান কাজ। আর এ কাজ করতে পারলে শুধু ডেঙ্গুই নয়, মশাবাহিত সব রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশের প্রতিটি নাগরিক। আমরা স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা করি। আর এই স্থায়ী সমাধানের একমাত্র পথ পরিচ্ছন্নতা। এ কাজে ইতিবাচক ফলাফলের জন্য শুধু সরকারনির্ভর হলেই চলবে না। দেশের প্রতিটি মানুষকে নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি সমাজকে পরিচ্ছন্ন রাখার কথাও ভাবতে হবে। তখনই সম্ভব হবে একটি পরিচ্ছন্ন রাষ্ট্র বিনির্মাণের।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মশক নিধন,এডিস মশা,ডেঙ্গু
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close