ড. ফোরকান আলী

  ২৩ জুলাই, ২০১৯

ঈদুল আযহার ত্যাগ ও মহিমা ।। শেষ পর্ব

হজ্বের মর্মকথা : যে ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে দেবে এবং মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) যে ইরাদা ও ইয়াকিনের সাথে মহান প্রভুর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেছিলেন, তা পালন করবে। এ পবিত্র কোরানুল করিমে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে: তিনিই ইব্রাহীম, যিনি তার রবের সাথে কৃত ওয়াদা পূরণের হক আদায় করেছেন। ইসলামের হজ্বের গুরুত্ব ও মাহাত্ম অপরিসীম। সুরা আল ইমরানে বলা হয়েছে, মানুষের ওপরে আল্লাহর এ অধিকার যে, বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছানোর যে শক্তি সামর্থ রাখে, সে যেন হজ্ব করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করে ও কুফরের আচরণ করে তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্বপ্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন। হযরত নবী করিম (সা.) এ সম্পর্কে বলেন, যে ব্যক্তির কাছে হজ্ব আদায়ের অর্থসামগ্রী আছে, যানবাহন আছে, যার দ্বারা মক্কা পৌঁছতে পারে, তারপর সে হজ্ব আদায় করে না, তাহলে সে অন্যধর্মী হয়ে মরুক, তাতে কিছু আসে যায় না। সারাবিশ্বে ভ্রাতৃত্ব ও সাম্যের বন্ধন রচনায় হজ্বের তাৎপর্য অপরিসীম। আরাফাতের ময়দানে এই ভ্রাতৃপ্রেম খুলে দেয় এক নতুন দিগন্ত। নানা বর্ণের, নানা ভাষার মানুষগুলো এক রাব্বুল আলামীনের তাঁবেদার হয়ে যায়। গোটা বিশ্বের মুসলমানরা তখন একই মিল্লাতের মানুষ। সবাই এক আদমের সন্তান, পবিত্র হজ্ব এটাই আমাদের শিক্ষা দেয় এবং ইবাদতের পাশাপাশি মহামিলনের মাঝে বৃহৎ ঐক্য স্থাপনের নজিরই হচ্ছে পবিত্র হজ্ব।

আরও পড়ুন : ঈদুল আযহার ত্যাগ ও মহিমা

আরও পড়ুন : ঈদুল আযহার ত্যাগ ও মহিমা ।। পর্ব ২​

আরও পড়ুন : ঈদুল আযহার ত্যাগ ও মহিমা ।। পর্ব ৩​

পবিত্র কুরবানি : পবিত্র হজ্ব আদায়ের অন্যতম অংশ হচ্ছে কুরবানি। কুরব শব্দমূল থেকে কুরবানির উৎপত্তি, যার অর্থ নৈকট্য। সোজা কথায় আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য আত্মোৎসর্গ করাই হচ্ছে কুরবানি। ১০ জিলহজ্ব হজ্বের এই বিধানটি পালন করা হয় এবং মুসলিম জাহানে কুরবানি ঈদ পালিত হয়। যা ঈদুল আজহা নামেও পরিচিত। পবিত্র কোরানুল করিমের সুরা হজ্বের আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন, আমার নিকট পশুর রক্ত-মাংস-হাড় ইত্যাদি পৌঁছায় না, পৌঁছায় শুধু তোমাদের অন্তরের তাকওয়া বা খোদাভীতি। মূলতঃ আমরা কুরবানির মাধ্যমে কতটুকু আত্মত্যাগ এবং খোদাভীতির পরিচয় দিচ্ছি ও আল্লাহপাকের নির্দেশ কতটুকু পালন করছি, তা তিনি প্রত্যক্ষ করেন। হযরত ইব্রাহীম (আ.) তার প্রাণাধিক পুত্র ইসমাইলকে মহান রাব্বুল আলামীনের নামে উৎসর্গ করে আত্মসমর্পণের নজির স্থাপন করেন। আমাদের উচিত তার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়া এবং আত্মত্যাগের শিক্ষায় স্রষ্টার নির্দেশ ও বিধানসমূহকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করা। হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহপাকের নির্দেশ পালনে এক মহান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আমাদের উচিত স্রষ্টার প্রতিটি আদেশ-নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা। ঈদুল আজহা শুধু গোশত ভক্ষণের উৎসব নয়, মানবিক কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার এক মোক্ষম সময়। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা এ সময় সৌভাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে পারি। অপরের কল্যাণে আত্মউৎসর্গ করতে পারি। কুরবানির শিক্ষাই তাই। প্রতিযোগিতামূলক রক্তক্ষরণে কুরবানির উদ্দেশ্য বিনষ্ট হয় জেনেও আমরা দাম হাঁকিয়ে কুরবানির শর্তাবলী ভঙ্গ করি। মানবিক কল্যাণ সাধনের পরিবর্তে সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট করি। অপরদিকে দারিদ্র্যের হক আদায়েও কুণ্ঠা বোধ করি। আবার প্রাচীনকালে মিনায় যেভাবে কুরবানির পশুকে নানা রঙে সজ্জিত করা হতো, কুরবানির পশুর হাটে এ দৃশ্য আমাদের চোখে পড়ে। এমনকি লৌকিকতা প্রদর্শনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শরীয়ত বিবর্জিত এসব কর্মকান্ড আমাদের সম্পূর্ণ পরিহার করে মানুষের পশু প্রবৃত্তি নিধনে নিজেকে উৎসর্গ করাই হজ্ব ও কুরবানির একমাত্র উদ্দেশ্য।

কুরবানির তাৎপর্য ও শিক্ষা : জিলহজ্বের দশ তারিখ এলে মুমিনের হৃদয়ে জেগে ওঠে হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর সেই সুমহান ত্যাগের স্মৃতি। প্রভু প্রেমে আপ্লুত হয়ে স্বীয় প্রাণ-প্রতিম পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার যে কঠিন পরীক্ষায় তিনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তা এক বিরল ঘটনা। আল্লাহ তার খলীলের সেই অকৃত্রিম ত্যাগকে মহাপ্রলয় পর্যন্ত স্মৃতির মিনারে অবিস্মৃত স্মৃতি হিসেবে ধরে রেখেছেন। ইসলামের অনুসারীরা হযরত ইব্রাহীম (আ.) কে অনুসরণ করে কিয়ামত পর্যন্ত কুরবানি করতে থাকবে। ‘ঈদুল আজহা’ শব্দদ্বয় আরবি। ‘ঈদ’ অর্থ-খুশি; আর ‘আজহা’ অর্থ-কুরবানি বা আত্মোৎসর্গ তাই ‘ঈদুল আযহা’ অর্থ হলো-আত্মোৎসর্গের খুশি, স্বভাবতঃ প্রশ্ন আসতে পারে, কুরবানির মধ্যে আবার খুশি কিসের? তাহলে এবার বুঝতে হবে, মূলত মুসলমানদের ঈদের খুশি সাধারণ অর্থে নয়; বরং এ খুশি হচ্ছে উৎসর্গ ও ত্যাগের মাধ্যমে ধর্মীয় কর্তব্য পালনের খুশি। ঈদুল আজহার সাথে কুরবানি সম্পৃক্ত বিধায় এটাকে কুরবানির ঈদ বলা হয়। ‘কুরবানি’ শব্দটা ‘কুরবানুন’ শব্দ থেকে উদ্ভূত। ‘কুরবানুন’ অর্থ হলো-নৈকট্য আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশ্যে আত্মোৎসর্গ করাই কুরবানি। শরীয়তের পরিভাষায় কুরবানি বলা হয়-আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্যে জিলহজ্ব মাসের ১০ হতে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু পশু কুরবানি করা প্রতিটি সঙ্গতিসম্পন্ন মুসলমান যার নিত্যপ্রয়োজনীয় জীবনধারণের সামগ্রী ছাড়া নেসাব পরিমাণ সম্পদ অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা এর যে কোনো একটির সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে, তার জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। কুরবানি ইসলামের অভিনব কোনো বিধান নয়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর শরীয়তের পূর্বেও এ প্রচলন ছিল। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কুরবানির একটি নিয়ম নির্দিষ্ট করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুষ্পদ জন্তু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ্ব, আয়াত: ৩৪)

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, হযরত আদম (আ.) থেকে হযরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবী-রাসুল ও তাদের অনুসারীরা কুরবানি করেছেন। তবে একেক উম্মতের কুরবানির পদ্ধতি ছিল ভিন্ন রকম। ইতিহাসে প্রথম কুরবানি সংঘটিত হয় হযরত আদম (আ.) এর পুত্রদ্বয় হাবিল-কাবিলের মাধ্যমে। আল্লাহ তাদের কুরবানির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘(হে নবী!) আর আপনি তাদেরকে আদমের পুত্রদ্বয়ের (হাবিল-কাবিলের) ঘটনা সঠিকভাবে শুনিয়ে দিন। যখন উভয়েই এক-একটি কুরবানি উপস্থিত করল এবং তৎমধ্যে একজনের (হাবিলের) কুরবানী কবুল হয় আর অপরজনের কবুল হয়নি। সেই অপরজন বলতে আরম্ভ করল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। উত্তরে সে বলল, আল্লাহ ধর্মভীরুদের কুরবানি কবুল করে থাকেন।’ (সুরা মায়েদাহ, আয়াত: ২৭) হযরত নূহ (আ.) এর যুগেও কুরবানির প্রথা চালু ছিল।

এ প্রসঙ্গে মিসরের প্রখ্যাত আলেম ও ইতিহাসবিদ মুহাম্মদ ফরিদ ওয়াজদী বলেন, হযরত নূহ (আ.) জন্তু জবেহ করার জন্য পৃথক একটি কুরবানিগাহ নির্মাণ করেছিলেন। তাফসীরে হক্কানীর ভাষ্যানুযায়ী হযরত নূর (আ.) ও হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর শরীয়তেও দ্বীনের বিধানরূপে কুরবানি স্বীকৃত ছিল। বর্তমান বাইবেলেও বহু স্থানে কুরবানির উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন ভারতবর্ষে নরবলির কুপ্রথা বিদ্যমান ছিল। কুরবানির মধ্যে ইহলৌকিক-পারলৌকিক উভয় কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আল্লাহ আল কোরআনে বলেন, ‘আর (কুরবানির) উটগুলোকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের বহু কল্যাণ নিহিত আছে।’ (সুরা হজ্ব, আয়াত: ৩৬) কুরবানির সাথে জড়িত রয়েছে আমাদের সমাজের স্বার্থ। তাই আমাদের ভেবে দেখতে হবে, আমরা তা সঠিকভাবে পালন করছি কিনা। আমরা কুরবানির গোশত সঠিক নিয়মে গরিব আত্মীয়-স্বজন বা গরিব-দুঃখীকে বিতরণ করছি কিনা। প্রকৃতপক্ষে কুরবানি প্রতিবছর আমাদের পশু হনন করতে আসে না, বরং পশু কুরবানির মাধ্যমে পশু-প্রবৃত্তিকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার কুরবানি যে একটি উত্তম ব্যবস্থা সে সূ² কথাটি স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুল আজহা আসে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই বান্দার মূল লক্ষ্য। এ প্রত্যয়ের ওপরই হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল কঠিন থেকে কঠিনতর পরীক্ষায় নিজেকে সমর্পণ করা। একইভাবে যুগে যুগে নবী-রাসুলগণ এই প্রত্যয়, এই ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে তাদের অনুসারীরাও তাদের অনুসৃত পথে চলেছেন। তাই আজ আমরা আমাদেরকে শুধু কুরবানির প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। বরং তাদের মতো প্রভ‚প্রেমে জাগরিত হয়ে জানমাল নিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসতে হবে। মানব কল্যাণের জন্য সকলকে উৎসর্গিত হতে হবে। পশু কুরবানির সাথে সাথে পশু শক্তিকেও কুরবানি করে দিতে হবে। ইসলামের সঠিক দীক্ষা নিয়ে সুন্দর সচেতন সমাজ, পাপমুক্ত পরিবেশ, হিংসামুক্ত রাজনীতি, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, সন্ত্রাসমুক্ত দেশ, প্রেম ও ভালোবাসা বিজড়িত বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে। ত্যাগ-উৎসর্গের মাধ্যমে অসহায় নিরন্ন-আশ্রয়হীন মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে হবে। তবেই ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে নেমে আসবে অনাবিল শান্তি, আর আদায় হবে কুরবানির স্বার্থকতা। কুরবানি হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহর সমীপে না তার গোশত পৌঁছে, আর না তার রক্ত বরং আল্লাহর কাছে তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে থাকে।” (সুরা হজ্ব, আয়াত: ৩৭)

পরিশেষে, কুরবানির কিছু মাসআলা উল্লেখ করতে চাই। আশা করি পাঠকবৃন্দ এতে উপকৃত হবেন। কেউ কেউ মনে করেন, যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব নয় তারা কুরবানি করতে পারবে না। এ ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। বরং তারা কুরবানি করলে অধিক সওয়াব পাবেন। নিজের পক্ষ থেকে কুরবানি করা ওয়াজিব। সন্তানের পক্ষ থেকে পিতার ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব নয়। তবে পিতা যদি নিজের মাল থেকে নাবালিগ ছেলের পক্ষ হয়ে কুরবানি করেন তাহলে নফল হিসেবে গণ্য হবে। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানি করা যায়। আর এতে তিনি অধিক সওয়াবের অধিকারী হবেন। যদি কোনো ব্যক্তির দশজন ছেলে থাকে আর সবাই একান্নভুক্ত হয়, তাহলে শুধু পিতার ওপর একটি কুরবানি ওয়াজিব হবে। তবে ছেলেরা যদি ব্যক্তিগতভাবে নিসাবের মালিক হয়, তাহলে পিতার কুরবানি তাদের জন্য যথেষ্ট নয়, পৃথকভাবে তাদেরকেও কুরবানি করতে হবে। অনুরূপভাবে স্ত্রী নিজে ‘মালেকে নেসাব’ হলে তাকেও আলাদাভাবে কুরবানি করতে হবে। কোনো কোনো স্থানে প্রচলন রয়েছে, এক বছর নিজের নামে, এক বছর ছেলের নামে এবং এক বছর নিজ স্ত্রীর নামে কুরবানি করে, অর্থাৎ প্রতি বছর নাম পরিবর্তন করতে থাকেন। এটা ঠিক নয়। বরং যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব, কেবল তার নামেই কুরবানি করতে হবে। কুরবানির পশুতে কাউকে শরিক করার ইচ্ছে থাকলে খরিদ করার পূর্বেই ঠিক করে নিবে। কারণ, একা কুরবানির নিয়তে পশু খরিদ করার পর অন্য কাউকে শরিক করা মাকরুহ। তবে এমন ব্যক্তি যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব নয়, সে একার নিয়তে খরিদ করার পর অন্যকে শরিক নিতে পারবে না। কুরবানির গোশত নিজে খাবে, বন্ধু-বান্ধব এবং ধনী আত্মীয়-স্বজনকেও দেবে। এমনকি অমুসলিম প্রতিবেশীকেও দিতে পারবে। তবে মৃতের অছিয়তকৃত কুরবানি হলে সে গোশত কেবল গরীবদের মধ্যে সদকা করতে হবে। কুরবানির গোশত, চামড়া ও তার মূল্য দ্বারা কসাই এবং জবেহকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া বৈধ নয়। পৃথকভাবে তাদের মজুরি দিতে হবে। চামড়ার বিক্রয়লব্ধ সমুদয় অর্থ গরিবকে সদকা করা ওয়াজিব। হালাল প্রাণীর ৮টি অংশ ছাড়া অন্য সবকিছু খাওয়া বৈধ। নিষিদ্ধ ৮টি অংশ হলোÐ উভয় লিঙ্গ, মূত্র থলি, পিঠের হাড়ের মধ্যকার সাদা রগ, চামড়ার নিচের টিউমারের মতো উঁচু গোশত, অন্ডকোষ, পিত্ত ও প্রবাহিত রক্ত। কুরবানির তাৎপর্য বুঝে আল্লাহ সকলকে কুরবানি করার ও তার শিক্ষা গ্রহণের তাওফিক দান করুন। আমীন!

লেখক: গবেষক ও শিক্ষাবিদ

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ত্যাগ ও মহিমা,ঈদুল আযহা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close