সম্পাদকীয়

  ২১ জুন, ২০১৯

অর্থনৈতিক অঞ্চলকে স্বাগতম

নতুন পরিকল্পনা এবং পরিকল্পিত বাস্তবায়ন। বাস্তবতার নিরিখে যদি সরকারের ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যায়, তা হলে বাংলাদেশ নিয়ে যারা স্বপ্ন দেখেন; তাদের সে স্বপ্নপূরণ হতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে বলতে পারব, ‘আমরাও পারি’। পাললিক মাটিতে গড়া মানুষের ইচ্ছাশক্তির কাছে অনেক পরাশক্তির পরাজয় মেনে নিতে দেখেছি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছি একটি রাষ্ট্র এবং পতাকা। এখন সেই দেশকে গড়ার দায়িত্ব আমাদের।

পদ্মায় অনেক জল গড়িয়েছে। এর মাঝে কেটে গেছে ৪৭ বছর। দেশ গড়ার কাজে সময়টা খুব একটা বেশি না হলেও শূন্য থেকে শুরু করে আজ আমরা যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি তাকেও কম বলা যাবে না। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের এই অর্জনকে খাটো করে দেখারও কোনো সুযোগ নেই।

আমরা এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সম্ভবত এখান থেকেই আমাদের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের মধ্য দিয়েই সে যাত্রার উদ্বোধন। এই পরিকল্পনা আমাদের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় ঘটাতে পারে এক শক্ত-সামর্থ্য উল্লম্ফন; যা দেশ ও জাতির জন্য বহুমাত্রিক কল্যাণ বয়ে আনবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

জমি পাওয়া সাপেক্ষে এ পর্যন্ত সারা দেশে সরকারি, বেসরকারি ও জিটুজি পদ্ধতিতে ৮৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এ যাবত ১৫ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। তার মধ্য থেকে ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।

ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ২৩ হাজার ৮২৩ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় আগামীতে বেজা ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করে বলেছে, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য উৎপাদন/রফতানি আয়ের দরজা খুলে যাবে।

আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জন্য সব প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করার সময় এসেছে। আমরা যখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ কর্মযজ্ঞে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছি; তখন কোনো ব্যর্থতা আর আমাদের পেছনে টেনে রাখতে পারবে না। আর অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সফলতার মধ্যেই নিহিত রয়েছে নক্ষত্রখচিত মাইলফলক। অর্থনীতির গতিপথে বাংলাদেশের জন্য যা হবে এক নতুন অধ্যায়।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অর্থনৈতিক অঞ্চল,উন্নয়ন,কর্মসংস্থান
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close