সম্পাদকীয়

  ২৮ মে, ২০১৯

মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হোক

ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ কোনো নতুন বিষয় নয়। আর এই সড়কপথে বাড়ি ফেরার সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় যানজট। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু এবং ঢাকা-বগুড়া ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের গাজীপুর, কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা এলাকার যানজটের বিড়ম্বনা ঘরমুখো মানুষের ঈদের আনন্দকেই মাটি করে দিত।

এমনও দেখা গেছে, যানজটের কারণে নির্ধারিত সময়ে বাড়ি ফিরতে না পেরে রাস্তায় ঈদের নামাজ পড়তে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। ঈদের এখনো বেশ কয়েক দিন বাকি। আমরা আশা করব, এখন থেকেই কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করে সড়কের যেসব জায়গায় সমস্যা রয়েছে, সেসব জায়গায় বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে। গাড়ির মালিক ও চালকরাও যাতে সড়ক আইন মেনে চলে শৃঙ্খলা বজায় রাখেন, সে ব্যাপারেও তারা সচেষ্ট থাকবেন।

আশার কথা, এবার কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী এবং কোনাবাড়ী উড়ালসড়ক খুলে দেওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন অনেকটাই নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছে মানুষ। মহাসড়কে নেই আর আগের মতো যানজট। যদিও রাজধানীর যানজট পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে ঢাকা থেকে বের হতেই মানুষের অনেক সময় লেগে যায়। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সোনারগাঁর কাঁচপুর এবং মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকা এখনো যানজটপ্রবণ। একই অবস্থা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কেও। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের উত্তরবঙ্গের ১১৮টি রোডের হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায় বহু গুণ। যে কারণে এখানেও যানজট প্রবল আকার ধারণ করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা নিরসনে সচেষ্ট থাকতে হবে। যাতে পরিস্থিতি কোনোভাবেই প্রতিকূলে না যায়।

এবার বিশেষত উত্তরাঞ্চল ও ময়মনসিংহ রুটে তার পুনরাবৃত্তি ঘটার আশঙ্কা প্রবল। তবে বাস মালিক ও গাড়িচালকরা যদি আন্তরিক থেকে সড়কে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলেন, তাহলে পরিস্থিতি ততটা নাজুক হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। আরেকটি বিপদ হলো, ঈদ এলেই সড়কে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা গাড়ি নামানো হয়। কর্তৃপক্ষকে যেভাবেই হোক এই অপতৎপরতা রোধ করতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিআরটিএ ভবনে ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আসন্ন ঈদে উত্তরাঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের পথে সড়ক সমস্যার কারণে যাত্রী ভোগান্তি হতে পারে। মন্ত্রী যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি লাঘব করতে গাজীপুরের মেয়র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআরটিএকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, ওপরের দুই রুট ছাড়া দেশের বাকি অঞ্চলে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।

মন্ত্রীর কথার রেশ ধরে আমরাও প্রত্যাশা করি, আসন্ন ঈদে সড়কপথে বড় ধরনের দুর্ভোগ ছাড়াই মানুষ ঘরে ফিরতে পারবে। এরই মধ্যে সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার পরিস্থিতি অনেক ভালো। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হওয়ায় ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ হবে না। মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঈদযাত্রা,দুর্ভোগ,সড়কে শৃঙ্খলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close