সম্পাদকীয়

  ১৯ মে, ২০১৯

স্বাগত টাইগারদের সাফল্য

অনেক দিনের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বহু আরাধ্য শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। পেল বিশ্বকাপের আগে নিজেদের বিশ্বাসের পাত্রে আরো কিছু আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি ঢালতে। ত্রিদেশীয় সিরিজে চাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দেশের ১৬ কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলো মাশরাফির নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া একঝাঁক তরুণের চোখ ধাঁধানো ক্রিকেট নৈপুণ্য। ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বপ্নের ব্যাপকতা যেন ছড়িয়ে পড়ল আকাশে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দল সেই আকাশে যেন ধ্রুবতারার মতো প্রজ্বালিত হয়ে বেঁচে থাকবে আগামীর ইতিহাসে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। হে তারুণ্য, তোমাকে সালাম।

সীমিত ওভার ফাইনালে এ-ই প্রথম তোমরা জেতার গৌরবে নিজেদের উজ্জ্বল করেছ। আমরা এর ধারাবাহিকতার স্বপ্ন দেখি। সামনে বিশ্বকাপ। আমাদের স্বপ্নের সঙ্গে তোমাদের দেশপ্রেমের মিশ্রণ ঘটলে এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। কেননা আমরা খুব ভালো করেই জানি, আমাদের খেলোয়াড়দের মাঝে অনেকেই বিশ্বমানের। এরই মধ্যে তা প্রমাণিত হয়েছে। তরুণদের মধ্যে প্রথমেই উচ্চারিত হতে পারে সৌম সরকারের নাম।

ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে তার এই ধারাবাহিকতা দেখে মনে হয়েছে, ক্রিকেট সাম্রাজ্যে বিশ্বমানের ক্রিকেটার হওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আসন্ন বিশ্বকাপের মধ্য দিয়েই সৌম সরকার সে উচ্চতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবেন। এখানে আরো এক তরুণের নাম না বললে পুরো লেখাটাই অসমাপ্ত থেকে যাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্ট ফাইনালে সৌম সরকারের ব্যাটে যে আলো ছড়িয়েছে, একইভাবে শেষটা হয়েছে মোছাদ্দেকের ব্যাটে। এই দুই তরুণের ব্যাটিং নৈপুণ্যের তান্ডবে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। সৌমের ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি মোসাদ্দেক হোসেনের।

ম্যাচ শেষে সবার আগে মোসাদ্দেককে বুকে টেনে নেওয়ার পর স্নেহের আলিঙ্গনে সৌম সরকারকে টেনে নিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ১৬ কোটি মানুষের ভালোবাসার নির্যাসে গড়ে ওঠা মুর্তজা তোমাকেও অভিনন্দন। অসম্ভবকে সম্ভব করেছ তুমি ও তোমার সতীর্থরা। বিশেষ করে বিশ্বকাপের আগে মোসাদ্দেকের এই চোখ ধাঁধানো পারফম্যান্স তোমার মনোবলকে নতুন মাত্রা দেবে বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা। আমরা আশা করব, মোসাদ্দেক তোমাকে নিরাশ করবে না। তার সেই শিশুসুলভ অবয়বের প্রতিচ্ছবিই আমাদের সে কথাই বলে। আর মোছাদ্দেকের জন্য নিজেকে খুলে ধরার এক সেরা ক্যানভাস হলো বিশ্বকাপ। ক’দিন পরেই যা শুরু হতে যাচ্ছে। তোমাদের জন্য রইল আমাদের আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

পরিশেষে একটি অনুরোধ। যখন তোমরা দেশের হয়ে কোথাও খেলতে নামবে, মনে রাখবে, তোমরা দেশের ইজ্জত রক্ষায় এক একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে যেভাবে নিজেদের উৎসর্গ করতে কার্পণ্য করেননি, একইভাবে দেশের ইজ্জত রক্ষায় তোমরাও জীবনবাজি রেখে মাঠে লড়াই করবে। মনে রাখবে, দেশপ্রেম এবং দেশপ্রেম—এর কোনো বিকল্প নেই।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সাফল্য,স্বাগত,টাইগার,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close