সম্পাদকীয়

  ০৩ মে, ২০১৯

অব্যাহত থাকুক ইতিবাচক ধারা

ছবি : সংগৃহীত

শেষ পর্যন্ত রাজনীতি যেন তার ইতিবাচক ধারায় ফিরতে পেরেছে। সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের পর এ ধারাকে হোঁচট খেতে হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর দেশে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও বিরোধী পক্ষ কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করে। সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হয়ে ওঠে। আগামীর কথা চিন্তা করে সাধারণ মানুষও কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ে। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অধিবেশন শুরুর ৯০তম দিনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া অন্য নির্বাচিতরা সংসদে যোগ দেন। আর এ যোগদানের মধ্য দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ নির্বাচনের পর সব দলের অংশগ্রহণে সংসদের নতুন যাত্রা। এতে সংসদীয় গণতন্ত্র আক্ষরিক অর্থে একটি ইতিবাচক ধারার জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএনপি সংসদে গিয়ে একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের রাজনীতি একটি ইতিবাচক পথে হাঁটার সুযোগ পেয়েছে। কারণ রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা না থাকলে দেশের মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আর সে কারণেই এ ক্ষেত্রে সরকারকেও যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিতে হবে।

বিগত নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ছয়টি আসনে জয়লাভ করেছে। এত অল্পসংখ্যক সদস্য সংসদে যোগ না দিলে সংসদ পরিচালনায় তেমন প্রভাব পড়ার কথা নয়, এ কথা যেমন সত্য—সংসদে যোগ না দিলে সামগ্রিক রাজনীতিতে এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কাও ছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শেষ মুহূর্তে বিএনপির সংসদে যাওয়া রাজনীতির জন্য ইতিবাচক লক্ষণ। যতই মতপার্থক্য থাকুক না কেন, মূল প্রক্রিয়ার সঙ্গে থাকাটাই দল ও রাজনীতির জন্য ইতিবাচক। তারা বলেছেন, নির্বাচনের পর বিএনপি সংসদে যেতে চায়নি। বিএনপি ভেবেছিল, শপথ নিলে এ সংসদকে বৈধতা দেওয়া হবে। এখন আর বলতে দ্বিধা নেই যে, বিএনপি সংসদে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে বৈধতাকে নিশ্চিত করল। একই সঙ্গে এ কথাও সত্য যে, সব দলের অংশগ্রহণে সংসদও পূর্ণতা পেল।

আমরা মনে করি, কোনো দলের প্রার্থী যখন মনোনীত হন, তখন তারা দলীয় প্রার্থী থাকেন না। তারা জনগণের সম্পত্তি হয়ে যান। আর এ কারণেই তাদের জনপ্রতিনিধি বলা হয়। তখন দলের চেয়ে দেশ ও মানুষের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রাধান্যে চলে আসে। আর সে বিবেচনায় শেষ মুহূর্তে এসে বিএনপির শপথ গ্রহণ দলটিকে গণতন্ত্রের মহাসড়কে উঠতে সাহায্য করেছে। একই সঙ্গে আমরা আরো মনে করি, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা প্রবাহিত হলে অনেক কিছুই হতে পারে। এ দেশে গণতন্ত্রের নান্দনিক ধারা ফিরে এসে মানুষের মুক্তচিন্তার পরিবেশকে আরো মজবুত করতে পারে আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ইতিবাচক ধারা,রাজনীতি,নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close