সম্পাদকীয়

  ১২ মার্চ, ২০১৯

মোবাইল ব্যাংকিংকে রক্ষা করা জরুরি

দেশে আর্থিক লেনদেনের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিং। অল্প সময়ে টাকা পাঠানো ও প্রাপ্তির সুযোগ করে দিচ্ছে এ ব্যাংকিং পদ্ধতি। যার ফলে এটির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে—এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে প্রযুক্তিনির্ভর এ মাধ্যমের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে নানা কথা। এর মূল কারণ, গ্রাহক তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় প্রচন্ড ঝুঁকির মুখে পড়ছে এই ব্যাংকিং লেনদেন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতারকরা এজেন্ট পয়েন্টগুলো থেকে বিভিন্ন কৌশলে তথ্য চুরি করে গ্রাহকদের চরম প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। এতে গ্রাহকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

দেশে ডিজিটাল প্রতারণার একেবারে শীর্ষে অবস্থান করছে এ ব্যাংকিং খাত। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন নতুন সেবা। যেমন : বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান ইত্যাদি। মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা ছয় কোটি ছাড়িয়েছে। এ সেবার মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত গ্রাহক’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদনে বিষয়টির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রযুক্তিগত সুবিধার অপব্যবহার করে ১৬ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের প্রতারিত করতে গড়ে উঠেছে বিশাল প্রতারকচক্র। চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায়ও আনা হয়েছে। তবু থামছে না প্রতারণা। এমনকি থানায় মামলা-জিডি কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযোগ আছে, মোবাইল ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া এ ধরনের প্রতারণা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে এবং তার যাবতীয় তথ্য প্রতারকদের জানার কথা নয়। কিন্তু তার পরও বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে দিনের পর দিন এভাবেই প্রতারণা করছে প্রতারকচক্র। অন্যদিকে, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংসেবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গ্রাহকদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। এ সতর্কতাও কোনো কাজে আসছে না।

তবে দুঃখজনক হলো, সারা দেশে প্রতারকচক্রের বিস্তার শনাক্ত করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ প্রতারণার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে সবার সাবধান হওয়া উচিত। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার টিমের আরো সক্রিয় ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। যদিও এরইমধ্যে কর্তৃপক্ষ মোবাইল ব্যাংকিংকে ব্যবহার করে গ্রাহক হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব মোবাইল ব্যাংকিংকে প্রতারকদের হাত রক্ষা করা জরুরি।

পি​ডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মোবাইল ব্যাংকিং,সম্পাদকীয়,আর্থিক লেনদেন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close