সম্পাদকীয়

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হোক ডাকসু নির্বাচন

নতুন নেতৃত্ব তৈরির সূতিকাগার আবার যেন তার মাতৃত্ব ফিরে পেতে চলেছে। সুদীর্ঘ ২৮ বছরের বন্ধ্যত্ব ঘুচিয়ে আবার যেন ফিরে পাবে তার মা হওয়ার অধিকার। আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যে ভোটকেন্দ্র হলে রেখেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) তফসিল ঘোষণা করা হয়। সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। প্রার্থী হওয়ার শেষ সময় ২ মার্চ। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৫ মার্চ।

তথ্য মতে, ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থীর করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের আদেশকে অনুসরণ করতে এই নির্বাচন। হাইকোর্ট তার দেয় আদেশের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে নির্দেশনা দেন। আদেশ পাওয়ার পরপরই সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেয়, ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে এ নির্বাচন হবে। তারই ফলে ১১ মার্চ নির্বাচন। এর আগে ১৯৯০ সালের ৬ জুন নির্বাচন হয়েছিল।

দেশের শিক্ষা, স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্জন ও অবদান কম নয়। নেতা তৈরির কারখানা বলা যায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে। উপমহাদেশের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) জন্মলাভ করে। এ যাবৎ ৩৬ বার নির্বাচন হয়েছে। তবে শেষদিকে এসে নির্বাচন যেন থমকে দাঁড়ায়। একসময় এসে মনে হয়েছিল ডাকসু নির্বাচন যেন জগদ্দল পাথরের মতো দেশ ও জাতির কাঁধে চেপে বসেছে। সুদীর্ঘ ২৮ বছর পর সেই পাথর সরতে বসেছে। আমরা এখন আশাবাদী হতেই পারি। যদিও নির্বাচন প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতদ্বৈততা আছে, শঙ্কাও আছে। ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য সংগঠনের অভিযোগ, তাদের কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থানের জন্য আবাসিক হলে আদর্শ পরিবেশ নেই। এ কারণে তারা একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র চান।

সহাবস্থান কতটুকু করা সম্ভব, কতটুকু আছে, সে বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এরই মধ্যে আবাসিক হলগুলোয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বহিরাগত ও অছাত্রদের হলত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া ব্যক্তিদের হলত্যাগে বাধ্য করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে অভিযান শুরু করেছে। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্রলীগের মতবিরোধও হয়েছে। তবে ডাকসুর গঠনতন্ত্রের (৮)ই ধারা অনুযায়ী নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হতে হবে হলগুলোর অভ্যন্তরে। কিন্তু ১১ ছাত্র সংগঠন বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র করার দাবি করলেও তা ধোপে টেকেনি। এরই মধ্যে নির্বাচনবিষয়ক কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বলেছে, প্রচলিত নিয়মেই ভোট গ্রহণ করা হবে। বহু দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও নান্দনিক নির্বাচন পাওয়ার প্রত্যাশায় রইলাম।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ডাকসু নির্বাচন,প্রতিদ্বন্দ্বিতা,সম্পাদকীয়,নেতৃত্ব
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close