সম্পাদকীয়

  ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯

উন্নয়নের পূর্বশর্ত

যেকোনো ক্ষেত্রে, উন্নয়নের পূর্বশর্তই হচ্ছে আলো। ক্ষেত্র আলোকিত না হলে উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। তা সে ব্যক্তিপর্যায়ে হোক আর রাষ্ট্রের প্রশ্নেই হোক। আলোবিহীন কোনো দেশ উন্নয়নের শিখরে উঠতে পেরেছে, এমন নিদর্শন সভ্যতার ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রকারভেদে সেই আলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এক. চিন্তা ও চেতনার আলো অর্থাৎ মনের আলো। দুই. প্রযুক্তির উন্নয়নে উদ্ভাসিত আলো। উপমা হিসেবে যাকে আমরা বিদ্যুৎ হিসেবে জীবনের অলিগলিতে বিচ্ছুরিত হতে দেখি।

আমাদের দেশে ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। তবে এরা সবাই এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসতে পারেননি। বলতে গেলে দেশ, জাতি, রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে এদের যেটুকু পাওয়ার কথা ছিল, তা এখনো পাননি। বঞ্চিত হয়েছেন। তবু বলা যায়, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণতা না এলেও বিতরণের সাফল্যকে অস্বীকার করা যাবে না। সম্প্রতি আরো এক কোটি মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দুটি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রকল্প এলাকার শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবেন। ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। আমরাও আশা করব যথাসময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হোক।


লাগামহীন দুর্নীতি সমাজকে কেবল অস্থির করে তুলবে না, ধ্বংসের শেষ প্রান্তেও নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং; দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্ভবত এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। কেননা প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করেছেন


সংবাদটি দেশ ও জাতির জন্য একটি শুভ খবর। পাশাপাশি আরো একটি খবর আমাদের জন্য বেশ কিছুটা পীড়াদায়কও বটে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, দেশে দুর্নীতি বেড়েছে। ঠিক যে সময় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন, ঠিক তখনই এ সংবাদ আমাদের দরজায় এসে কড়া নাড়ল। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় ২০১৮ সালে অবনতি হয়েছে ছয় ধাপ। এই ফলাফলের বদান্যতায় এবার বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ সর্বনিম্ন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। আর দক্ষিণ এশিয়ায় দুর্নীতিতে বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে শুধু আফগানিস্তান।

আমরা এ রকম সংবাদের মুখোমুখি হতে চাই না। আমরা দুর্নীতিমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে আছি। আমরা জানি, দুর্নীতিমুক্ত দেশের অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। তবে দুর্নীতি হলেও তার মাত্রাও হতে হবে সহনশীলতার আওতায়। লাগামহীন দুর্নীতি সমাজকে কেবল অস্থির করে তুলবে না, ধ্বংসের শেষ প্রান্তেও নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং; দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্ভবত এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। কেননা প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করেছেন। আর আমরা সেই ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চাই, আমরাও আছি এবং থাকব।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শর্ত,উন্নয়ন,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close