সম্পাদকীয়

  ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

বিদ্যুৎ আমদানির দরজা খুলল

বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো একটি সফলতা ঘরে তুলল বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতকে ‘আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ বিনিময় নির্দেশিকা ২০১৬’-এর একটি ধারায় আপত্তি জানিয়ে আসছিল। ওই ধারায় বলা হয়েছিল, প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করতে হলে তাদের দেশের কোম্পানির মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। এটাই ছিল শর্ত। ফলে দ্বিপক্ষীয়ভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর পক্ষে চুক্তি করা সম্ভব ছিল না। এখন সে বাধা আর নেই।

গত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ভারত আমদানি বা রফতানি (ক্রসবর্ডার) নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। অনুমোদিত নতুন এই প্রকাশিকা মতে, ভারত ভূখন্ড ব্যবহার করে কোনো শর্ত ছাড়াই প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করতে পারবে। অর্থাৎ এখন পাশের দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে আর কোনো বাধা রইল না। এই সিদ্ধান্তে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পথ আরো সহজতর হলো। একই সঙ্গে উচ্চারিত হতে পারে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য। এ কারণে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতাকে অভিনন্দন। সেই সঙ্গে অভিনন্দন ভারত সরকারকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারে ২০১৮ সালে সমঝোতা স্মারক সই হয়। গত ৩ ও ৪ ডিসেম্বর নেপালের সঙ্গে গঠিত প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ ও জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় কাঠমুন্ডুতে। এখন ভারতের মত পরিবর্তন বা নতুন সিদ্ধান্তের কারণে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বাংলাদেশের জন্য সহজতর হলো।

বাংলাদেশ এখনো বিদ্যুৎ ঘাটতিতে রয়েছে। ক্রমবর্ধমান এই চাহিদা মেটানোর জন্য ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই ভারত থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। আরো ১ হাজার মেগাওয়াট আমদানির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

আমরা মনে করি, বিদ্যুৎ একটি রাষ্ট্রের সব উন্নয়নের চাবিকাঠি। বিশেষ করে, শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে তা অপরিহার্য। তবে এখানে একটি কথা না বললেই নয়, প্রয়োজনে আমরা বিদ্যুৎ আমদানি করতেই পারি। তবে কেবল আমদানিনির্ভরতার ওপর নির্ভর করে থাকাটা কতটা যৌক্তিক হবে, তা নিয়েও ভাবতে হবে। বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। সরকার অবশ্য সেদিকে যথেষ্ট মনোযোগী। ইতোমধ্যেই তারা দুটি ম্যাগা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন।

আশা করি, তারা তাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা এ ক্ষেত্রেও বজায় রাখতে সক্ষম হবেন। আমরা আমাদের বিদ্যুৎ দিয়েই আমাদের চাহিদা পূরণে সক্ষম হব- এটাই ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিদ্যুৎ আমদানি,বৈদেশিক সম্পর্ক,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close