সম্পাদকীয়

  ২১ অক্টোবর, ২০১৮

পরিবহন শ্রমিকদের ডেটাবেইজ কর্মসূচি

জঙ্গি কার্যক্রম প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এবার পরিবহন শ্রমিকদের ডেটাবেইজ তৈরি হচ্ছে। তবে বিষয়টি যদি সড়ককে নিরাপদ করার লক্ষ্যে করা হতো, তাহলে এ কর্মসূচি আরো অনেক বেশি গ্রহণীয় হতো বলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধারণা। গণপরিবহনের চালক, কন্ডাক্টর, সুপারভাইজার ও হেলপারদের তথ্য সংরক্ষণে একযোগে কাজ করছে পরিবহন মালিক সমিতি, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে এর আগে পুলিশ ‘সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআই এমএস)’ নামে একটি ডিজিটাল ডেটাবেইজ তৈরির কার্যক্রম পরিচালনা করে। যেখানে দেশের সব নাগরিকের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। সেই ডেটাবেইজের আওতায় এবার গণপরিবহনের চালক, হেলপারদের আলাদা ফরমেটে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

প্রায় দুই বছর ধরে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে পুলিশ। শুরুতে ঢাকা মহানগরীতে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য নিয়ে ডেটাবেইজ তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল পুলিশ। পরে সেই ডেটাবেইজের কাজ সারা দেশে শুরু করা হয়। লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের অবস্থান জানতে এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা যাতে কোথাও আস্তানা গাড়তে না পারে, সে জন্যই এ কর্মসূচি গড়ে তোলা এবং তা অব্যাহত রয়েছে। এই কার্যক্রমকে ইতিবাচক উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সুফল পাচ্ছেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের এ মন্তব্যের সত্যতা পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।

সাধারণ মানুষ মনে করে, প্রতিদিনের সড়ক দুর্ঘটনাই প্রমাণ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের মন্তব্য কতটা যৌক্তিক! তবে, ‘নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’ বলে একটি বহুল প্রচলিত প্রবচন আছে। আমরা সেই কানা মামার সাক্ষাৎ পেয়ে আপাত সন্তুষ্ট। সম্প্রতি অনেক দুর্ঘটনার পর এবং অন্য কোনো অপরাধ করে গণপরিবহনের শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে তাদের তথ্য পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। এ ছাড়া দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিজেরাও যখন মারা যায়, তখন তাদের স্বজনদেরও খুঁজে পেতে চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয়। সে জন্য তড়িৎ তাদের বা তাদের স্বজনদের খুঁজে পেতে তথ্য সংরক্ষণের কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যেই কাজ শুরুর কথাও বলেছেন তারা।

অবস্থান শনাক্ত করে তাদের খুঁজে বের করার কাজটি সহজ হবে বা হয়েছে—এ কথা সত্য কিন্তু সড়ক নিরাপদ করার কাজে বিষয়টি কতটা সহায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বিষয়টি যতটা কাজে আসবে, ততটা বোধহয় সড়ককে নিরাপদ করার ক্ষেত্রে আসবে না। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তারা সড়ককে নিরাপদ করতেই বেশি আগ্রহী। সড়ককে নিরাপদ করার কাজে এ কর্মযজ্ঞকে আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত করার অনুরোধ রইল। সড়কের হত্যাযজ্ঞ কমাতে যদি এ কর্মযজ্ঞ কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, তাহলেই তা হবে একটি মাইলফলক এবং আমাদের প্রত্যাশা সেখানেই।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কর্মসূচি,ডেটাবেইজ,পরিবহন শ্রমিক,সম্পাদকীয়,তথ্য সংরক্ষণ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close