ফনিন্দ্র সরকার

  ১৫ আগস্ট, ২০১৮

মহত্তম শহীদ

দেশপ্রেম ও নৈতিকতা আমাদের বাধ্য করে এ কথা স্বীকার করতে যে, বঙ্গবন্ধুই হচ্ছেন স্মরণাতীতকালের মহত্তম শহীদ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নিন্দনীয় ও অভিশপ্ত প্রত্যুষে বঙ্গবন্ধুর শহীদ হওয়ার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণের জন্য উপমহাদেশে তাঁর মতো ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও উত্থান নজিরবিহীন। তাই তাঁর উত্থান ও বিকাশের পেছনে অবিকৃত স্বাক্ষর তুলে ধরা না হলে ইতিহাসে তাকে যথার্থ মূল্যায়ন সম্ভব নয়। এ যাবৎ তাঁকে নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। এ কথা অজানা নয়, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সব ধরনের অবিচার অবিমৃশ্যকারিতা ও অপরাধ প্রতিরোধ তথা বিরোধিতা করার মানসিকতা নিয়ে বাল্যকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু বেড়ে উঠছিলেন। তৎকালীন সামাজিক বাস্তবতায় বঙ্গবন্ধুর প্রাথমিক প্রতিবাদ ছিল সাম্প্রদায়িক বিচ্যুতির বিরুদ্ধে। তিনি যখন বুঝতে শিখেছেন, অর্থাৎ সেই কিশোরকাল থেকে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন তথাকথিত উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের অত্যাচারী ভূমিকা।

উল্লেখ্য, সংখ্যালঘিষ্ঠ সুবিধাভোগী শ্রেণির লোকরা সীমাবদ্ধ ছিল ক্ষুদ্রতর শিক্ষিত উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ে এ কথাটি ১৯ শতকের ২০ এবং ৩০-এর দশকের ইতিহাসে প্রমাণিত। ১৭৫৭ থেকে গত শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই নীতি অনুসরণ করেছে। উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্বাচিত সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা ও পরিপুষ্টির জন্য কাজ করেছে। ঠিক এ পর্যায়ে তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণভাবে পশ্চাৎপদ শ্রেণি, বিশেষ করে মুসলমানদের প্রতি শোষণনীতির বাস্তবচিত্র প্রত্যক্ষ করেছেন। প্রতিকারহীন এই দুর্দশা থেকে তাদের রক্ষার জন্য তিনি আপসহীন প্রতিবাদ ও আন্দোলনমুখর হন। দুঃখজনক হলেও সত্য, বঙ্গবন্ধুর এই ভূমিকাকে বিশেষ গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক চেতনাপ্রসূত বলে প্রচার করেছিলেন, যা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। বিদেশি শাসকদের নীতি ছিল সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টি করা। সে সময় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলমানদের বিলম্বিত প্রবেশ ভাগ্যবান হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পচ্ছন্দনীয় ছিল না, যদিও এটা হয়েছিল বিদেশি শাসকদের অনুসৃতনীতির দরুন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের প্রাক্কালে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শতকরা প্রায় একশ ভাগ শিক্ষকই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত। ফলে বাংলার পশ্চাৎপদ শ্রেণি বিশেষ করে মুসলমানদের প্রতি সংখ্যালঘিষ্ঠ উচ্চবর্ণের শিক্ষিত হিন্দু সম্প্রদায়র বিদ্বেষ প্রক্ষিপ্ত হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসকদের সাম্প্রদায়িক কূটচালে উপমহাদেশের প্রধান দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গাও সংগঠিত হয়েছিল। ইংরেজদের কূটবুদ্ধিপ্রসূত পরিকল্পনার ফলে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈরী ভাবাপন্ন পরিবেশ বিরাজ করছিল। ওই সময়ে বঙ্গবন্ধু এই ভেদনীতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেননি। রাজনৈতিক জীবনে গোড়ার দিকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুসলিম লীগের নিবেদিত প্রাণকর্মী। সে সময় কার্যত মুসলিম লীগই ছিল মুসলমানদের একমাত্র প্ল্যাটফরম।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই বাংলার জনগণ যেভাবে সব রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অবাঙালিদের হাতে ন্যস্ত করেছে, তার প্রশংসা বা স্বীকৃতি দেওয়া ছাড়া ভিন্ন গত্যন্তর ছিল না। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আদর্শ অনুযায়ী হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দীরই পুরো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা। কেন না মননে এবং প্রশিক্ষণে তিনি ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের অনেক ওপরে। দুঃখজনকভাবে ১৯৪৭ সালে বাঙালি মুসলমানরা অবাঙালি প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। তবে কিছুদিনের মধ্যেই বাঙালির বিশ্বাস ভঙ্গ হয়। সে সময় তরুণ শেখ মুজিব ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন, অবাঙালি শিক্ষিত মুসলমান এবং উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো তফাত নেই। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হন এবং সে সময়কার এই প্রতিবাদীকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে সাব্যস্ত করে শাসকগোষ্ঠী। ৪০-এর দশকে শেষদিকে সোহরওয়ার্দী যখন ভারত থেকে পূর্ববঙ্গে আসেন, তখন মুসলীম লীগ নেতাদের অপকর্ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে সোহরওয়ার্দী আওয়ামী মুসলিম লীগের পত্তন করেন। তরুণ বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হন। তবে দ্রুতই তিনি শীর্ষ স্থানটিতে অভিসিক্ত হন তার নিজস্ব যোগ্যতা ও মেধার কারণে। আওয়ামী মুসলিম লীগ পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়ে বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন শুরু করে। তবে একটি প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলেই নয়, সোহওয়ার্দী যখন পূর্ববাংলায় এসে পৌঁছান তখন তার চেয়ে কম যোগ্যতা ও কম মেধাসম্পন্ন পাকিস্তানি শাসকরা আঁতকে ওঠেন এবং তাকে বাধ্য করেন পূর্ববাংলা ছেড়ে করাচীতে যেতে, সেখানে সদ্য আসা উত্তর ভারতের উর্দুভাষী মোহাজারদের আধিপত্য শুরু হয়। কারণ, স্থানীয় সিন্ধিদের চেয়ে তাদের সংখ্যা বেশি হয়ে যায়। করাচী কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে পূর্ববঙ্গ সরকার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করে। তেইশ বছর স্থায়ী পাকিস্তানের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ১৪ বছর কাল কারাগারে কাটান বঙ্গবন্ধু। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কারণে এত বছর কাল কারাজীবন রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা। সোহরাওয়ার্দীর জীবদ্দশায়ই বঙ্গবন্ধু এমন সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেন, যাতে তার আসন নির্দিষ্ট হয়ে যায় সবার ওপরে। সমকালীন পূর্ববঙ্গ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যারা বঙ্গবন্ধুর কনটেমপোরারি ছিলেন, তাদের অনেকের শিক্ষা-দিক্ষা ও ঐতিহ্য বঙ্গবন্ধুর ওপরে হলেও বঙ্গবন্ধুকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেননি, বরং একমাত্র নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হন।

১৯৫৮ সালের শেষ দিকে যখন জেনারেল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করেন, তখন একমাত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং তার দল আওয়ামী লীগই সামরিক স্বৈরাচারের নির্যাতনের শিকার হন। সামরিক আইনের বিরুদ্ধে একমাত্র সোহরওয়ার্দী এগিয়ে আসেন। তিনি যখন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে ঠিক সে সময় নিঃসঙ্গ পরিবেশে বৈরুতের নির্জন হোটেল কক্ষে সোহরওয়ার্দীর মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়। সোহরাওয়ার্দীর এই রহস্যজনক মৃত্যুর পর পাকিস্তানের সামরিক আমলা, শিল্পপতি চক্রের ক্ষমতা সুসংহত করা সহজ হয়। আর এ প্রক্রিয়ায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। বঙ্গবন্ধু তখন নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। কিন্তু তার পরও তিনি দলকে পুনরুজ্জীবিত করার কাজ এককভাবে এগিয়ে নিয়ে যান। এর মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে জড়ানো ছিল পাকিস্তানের কফিনে শেষ পেরেক। আগরতলা মামলার কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ রুদ্ররোষে ফেটে পড়ে এবং সর্বশক্তিতে আইয়ুবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এ পর্যায়ে আইয়ুব খান চূড়ান্ত আত্মসমর্পণে বাধ্য হন এবং জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এক মানুষ এক ভোটের ভিত্তিতে দেশের সাধারণ নির্বাচনে ইয়াহিয়ার প্রতিশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা হস্তান্তরকে সমর্থন জনান। পাকিস্তানের একমাত্র নিরপেক্ষ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু ও তার দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পরও পাকিস্তানি সেনা গোয়েন্দা চক্রের প্রতিভু জেড এ ভুট্টো একজন বাঙালির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দেন। ভুট্টোর প্ররোচনার ইয়াহিয়া আবার দ্বিতীয় দফা পাকিস্তানে সামরিক শাসন আরোপ করেন। সামরিক শাসনের মাধ্যমে নির্যাতনের একমাত্র লক্ষ্যই ছিল পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার পরও ইয়াহিয়া বিবেকবর্জিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। ২৫ মার্চের কালরাতে বাঙালির প্রিয় নেতাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিক্ষেপ করে। অক্সফোর্ড শিক্ষিত ভুট্টো তার ‘দ্য গ্রেট ট্র্যাজেডি’ গ্রন্থে এই ত্রাসের রাজত্বকে পাকিস্তান রক্ষার রাজনীতি হিসেবে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে, পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিদের ওপর চালানো হয় শতাব্দীর বীভৎস ও নারকীয় তা-ব। যার একমাত্র তুলনা চলে হিটলারের সংখ্যালঘু ইহুদিদের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে। তবে তফাত এটুকু জার্মানির ইহুদিরা ছিল সংখ্যালঘিষ্ঠ আর পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ।

১৯৭১ সালের শেষদিকে চীন সফর শেষে রাওয়ালপিন্ডিতে ফিরে ভুট্টো বড় গলায় ঘোষণা করেন, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হলে মাও সেতুং ও চৌ এন লাইয়ের নেতৃত্বে চীন পাকিস্তানের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভুট্টোর ম্যাকিয়া ভেলি সুলভ আচরণের কাছে ইয়াহিয়া নতিস্বীকার করতে বাধ্য হন। ভুট্টোর বিশ্বাস ছিল ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে পাকিস্তান ভেঙে যাবে। খণ্ডিত পাকিস্তানের ভুট্টো হবেন একক নেতা। মূলত এটাই ভুট্টোর পরিকল্পনা। বাস্তবে ঘটেছিলও তাই। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যা কিছু ঘটে ভুট্টো তার সবকিছু বঙ্গবন্ধুর কাছে গোপন রাখেন। এমনকি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয় অর্জনের খবরও বঙ্গবন্ধুর কাছে ছিল অজ্ঞাত। এ ছাড়া পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সব খবর গোপন রাখেন, যা হোক ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ দেশ শত্রুমুক্ত হয়। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ১০ জানুয়ারি তিনি স্বদেশে আসেন। স্বদেশের মাটিতে পা রেখে তিনি দেখতে পান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম তাণ্ডব চিত্র। বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং নিজস্ব বুদ্ধিমতায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শুধু নামের জাদুতেই একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অবকাঠামো ছাড়াই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। তবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনায় সুকঠিন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ রাজনীতিবিদ ও প্রশাসক বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেন। ফলে তাকে এককভাবেই এ দায়িত্ব পালন করতে হয়। এভাবেই বিশ্বাসঘাতকরা বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি তৈরি করেন।

দুঃখজনক হলেও সত্য, উপমহাদেশের ভৌগোলিক রাজনীতি এবং আঞ্চলিক রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার মতো কোনো উপদেষ্টাও তার ছিল না। ধীরস্থির বস্তুনিষ্ঠ এবং রাজনীতিক মূল্যায়নে আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এই সত্যপোলব্ধিতে উপনীত হতে পারি যে, বঙ্গবন্ধু তার বিশ্বাসের জন্যই আত্মত্যাগ করতে পেরেছেন। যার ছিল ধর্মের প্রতি এবং দেশের প্রতি নিরঙ্কুশ আনুগত্য। বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে শিখা বঙ্গবন্ধু প্রজ্বালিত করে গেছেন, তার আলোয় উদ্ভাসিত হবে সারা বিশ্ব।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট [email protected]

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নিবন্ধ,বঙ্গবন্ধু হত্যা,শেখ মুজিবুর রহমান
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close