সম্পাদকীয়

  ০৬ আগস্ট, ২০১৮

চাই নিরাপদ সড়ক

দেশের বিশিষ্টজনরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে বলেছেন। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাস্তায় নামা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অর্জনকে বলেছেন অবিস্মরণীয়। জাতি দিয়েছে জয়ের স্বীকৃতি। প্রশ্ন উঠেছে, আমরা তাদের কাছে কতটুকু আশা করতে পারি? দেশের বৃহত্তম অংশ বলছে, ৪৭ বছরে আমরা (বয়স্করা) যা পারিনি, তা অর্জন করে দেখিয়ে দিল এই কোমলমতি শিশুরা। সম্ভবত এ দৃষ্টান্ত বিশ্বে আর কোথাও নেই। তারা চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কোথায় গলদ!

একই সঙ্গে বলতে হয়, তারা যা দেখিয়েছে তার বিন্দু-বিসর্গও মিথ্যা নয়। সবটুকুই সত্য। তারা জাতির শেকড় ধরে নাড়া দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের মুখোশ উন্মোচন করে বলছে, আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। সড়ককে যারা নিরাপদহীন করে তুলেছে, তাদের যথাযথ বিচার এবং যথাযোগ্য শাস্তি দাবি করি।

সড়ক নিরাপদ হলে নিরাপদে মানুষ তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু শঙ্কা দেখা দিয়েছে এই অর্জনের শেষ রক্ষা নিয়ে। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা ধরনের গুঞ্জন। গুজবে সয়লাব হচ্ছে দেশ। বিভ্রান্ত হচ্ছে মানুষ। উদ্বিগ্ন সবাই। এর মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষে শুরু হয়েছে হামলা। পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। রাজপথের মিছিল হচ্ছে দীর্ঘ। কোমলমতি শিশু-কিশোরদের সমর্থনে গতকাল রাজপথে নেমে আসেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।

তারা দাবি তুলেছেন, নৌপরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ। বলেছেন, কোমলমতি শিশু-কিশোরদের ওপর যেকোনো ধরনের হামলার প্রতিবাদ তারা করবেন। একই সঙ্গে এ কথা না বললেই নয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও এই শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার কোমলমতি আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়ার প্রতি সমর্থন জানানোর পরও তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।

আন্দোলনকারীরা এ পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার মধ্যে সহিংসতার কোনো নমুনা খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিপরীতে যা হয়েছে, তার পুরোটাই অনৈতিক এবং অনাচার। তাদের বিরুদ্ধে কাউকে সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। বরং তাদের লালন করেছেন অনেকেই। আর আজ শিশুরাই কোমর বেঁধে নেমেছে তাদের বিরুদ্ধে। এরা কেবল সমাজের পচে যাওয়া, গলে পড়া অনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলোকে তুলে এনে মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিয়েছে। এই ছোট্ট(!) কাজটি বড়রা করতে ব্যর্থ হলেও ছোটরা তা করে দেখিয়ে দিয়েছে, ন্যায় ও সততার জয়কে কেউ রুখতে পারে না। আমাদের শিশুদের জয়কেও কেউ রুখতে পারবে না। ইতোমধ্যেই তারা জয়ের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। ঘোষণাটি আসছে এবং সেই ঐতিহাসিক ঘোষণাটি দেবেন আমাদের প্রধান নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা প্রতীক্ষায় থাকলাম।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নিরাপদ সড়ক,সম্পাদকীয়,শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist