সম্পাদকীয়

  ৩১ জুলাই, ২০১৮

শিশুদের অধিকার নিশ্চিত হোক

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আলোকবর্তিকা হয়ে একদিন তারাই দূর করবে সব অন্ধকার। রুখে দাঁড়াবে কুসংস্কার ও সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে। তাই এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হলে শিশুদের প্রতি সমাজ এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৪) ধারা অনুযায়ী শিশুদের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। শিশুদের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরদানকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। শুধু তাই নয়, এর বিভিন্ন ধারা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণসহ দীর্ঘদিন ধরে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। কিন্তু তার পরও বলতে হচ্ছে, দেশে আর্থিক, পারিবারিক ও সামাজিক কারণে এই শিশুদের একটি বিশাল অংশ স্বীকৃত অধিকার থেকে বঞ্চিত।

আশার কথা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক গুণাবলি জাগ্রত করে শিশুদের ছোটবেলা থেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মাদক-সন্ত্রাস ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সচেতন নতুন প্রজন্মই সবচেয়ে বড় শক্তি। নতুন প্রজন্মকে দেশের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে। গত রোববার গণভবনে গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্কাউটসের একটি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, প্রধানমন্ত্রী শিশুদের নিয়ে যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তা নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। বরং আমরাও চাই শিশুরা সঠিকভাবে বেড়ে উঠুক। তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন পারিবারিক শিক্ষা। এ ক্ষেত্রে পরিবারের অভিভাবকদের রয়েছে বিশাল ভূমিকা। তারা যদি দায়িত্বশীল ও চিন্তা-চেতনায় আধুনিক মনস্ক হন, তবেই একটি শিশু সেই মনমানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে। জাতিও তখন তার প্রতি আশান্বিত হতে পারে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এ বাস্তবতায় থাকে গরমিল।

জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে আজ অসংখ্য শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। ফলে এসব শিশু প্রায় সব ধরনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে শিশু-কিশোরী মেয়েরা কাজ করে থাকে। সংসারের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা ছাড়াও তাদের নানা ধরনের কাজ করতে হয়। আবার কাজে হেরফের ঘটলে নেমে আসে অবর্ণনীয় অত্যাচার। এ ছাড়া রয়েছে পথশিশুদের জীবনযাপনের দুর্বিষহ চিত্র। ২০০৫ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে পথশিশুর আনুমানিক সংখ্যা ছিল প্রায় সাত লাখ এবং একই জরিপে বলা হয় ২০১৪ সালে এই সংখ্যা হবে প্রায় ১২ লাখ। আমরা জানি সরকার শিশুবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাস্তবে তার প্রতিফলন কতটুকু হচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমরা মনে করি, শিশুদের জন্য বাস্তবমুখী কিছু করা গেলে নিঃসন্দেহে এরা হবে দেশের অমূল্য সম্পদ। অসহায় শিশুদের ভাতা চালু করার বিষয়টি যদিও কঠিন, তবে একেবারে অসম্ভব নয়। এ ব্যাপারে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকেও কাজে লাগানো যায়। শিশু গৃহকর্মী এবং পথশিশু এরা এ দেশেরই নাগরিক। এই শিশুদের অধিকার এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা দেশ ও জাতি সবারই দায়িত্ব।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শিশুর অধিকার,সম্পাদকীয়,নতুন প্রজন্ম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist