সম্পাদকীয়

  ২২ জুন, ২০১৮

সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত খারাপ খবর শুনতে শুনতে যখন মনটা বিষিয়ে উঠেছে; ঠিক তখনই একটি শুভ সংবাদ অনেকটা অনাহুত অতিথির মতো দরোজায় কড়া নাড়ল। প্রথমে বুঝে উঠতে পারিনি। দরোজা খুলতেই মনে হলো, ফাগুনের ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে বসন্ত যেন অনুমতির তোয়াক্কা না করে প্রবেশ করল ঘরে। বুকের ভেতরে জমে থাকা শঙ্কা অনেকটাই যেন সরে গেল। মনে হলো, মাদক কালচার থেকে এবার হয়তো সরে দাঁড়াতে পারবে দেশ। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাদকের পৃষ্ঠপোষক ও গডফাদারের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ সংশোধিত আইনে এ ধরনের শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ে পৃষ্ঠপোষক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনার জন্য মানি লন্ডারিং-সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ অনুযায়ী মাদক অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। তবে বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে-কর্তৃত্বে কিংবা অধিকারে মাদকদ্রব্য পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর এ কারণেই মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা পার পেয়ে যান। এই মাস্টারমাইন্ডরা যাতে পার পেতে না পারেন; সেজন্য আইনে পরিবর্তন এনে আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীসহ এ কাজে যারা যুক্ত থেকে কাজটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে যাচ্ছেন তাদের সবার প্রতি আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন। তবে সেই সঙ্গে একটি সতর্ক সংকেতও আছে। আর সে সংকেতটি হলো, ভূত তাড়াতে যে সরিষার দানা ব্যবহার করা হবে, সেই দানার ভেতরে যেন ভূত থেকে না যায়। যদি দানার ভেতরে ভূত থেকে যায়, তাহলে গোটা পরিকল্পনাই বৃথা যাবে। সূতিকাগারে শুধু এর অপমৃত্যুই হবে না; মহামারী আকারে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে পারে সমাজের অলিগলিতে।

ঘর পোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পাবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরাও সেই ভয়ের বাইরে নই। আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ নিরাপত্তায় জড়িত সব সংস্থার কতিপয় সদস্য তাদের দায়িত্ব পালনে যে নিদর্শন রেখেছেন, সেখান থেকেই এই ভয়ের উদ্ভব। এক টন দুধ নষ্ট করার জন্য এক ফোঁটা গো-চনাই যখন যথেষ্ট; তখন সেই এক ফোঁটা চনার দিকেই তীক্ষ্ম নজরদারি হয়ে উঠতে পারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ দেশে কোনো সরকারকে এ বিষয়ে কখনো তেমন একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি।

আমরা মনে করি, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি মাথায় রেখেই মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আইন সংশোধনের কথা বলেছেন এবং সংশোধনের পর তার প্রয়োগ পদ্ধতিকেও ঢেলে সাজাবেন। যে পদ্ধতি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কার্যকর হবে—এটাই আজ বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মৃত্যুদণ্ড,মাদক,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist