সম্পাদকীয়

  ০৭ এপ্রিল, ২০১৮

মিয়ানমারের কূটচাল

সবকিছুই নির্ভর করছে মিয়ানমারের সদিচ্ছার ওপর। যেখানে ইচ্ছারই কোনো প্রতিফলন নেই, সেখানে সদিচ্ছা তো অনেক দূরে। দীর্ঘ সময় ধরে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার যা ঘটিয়েছে, তাকে একটি কূটচাল অথবা কূটকৗশল ছাড়া অন্য কিছু বলার সুযোগ নেই। সরকারের নানামুখী উদ্যোগসহ মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ দেশটিকে তার অনৈতিক পরিকল্পনা থেকে এক চুলও সরাতে পারেনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে তারা তাদের নীলনকশা থেকে সরে আসতে নারাজ। আর সে কারণেই এহেন আচরণ।

বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৬৭। আর প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই করে মিয়ানমার ঘোষণা দিয়েছে, এ মুহূর্তে তারা ৬৭৫ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে প্রস্তুত। বিষয়টিকে তামাশা বললে কম বলা হবে। এমন তামাশা দেখার জন্য বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। আমাদের উদারতাকে মিয়ানমার দুর্বলতা মনে করে এহেন আচরণ করার সাহস দেখাচ্ছে। তাদের মনে রাখা উচিত যে, বাংলাদেশকে তারা যতটা দুর্বল ভাবছে দেশটি তাদের ভাবনার বিপরীত। কেবল সময়ই তার সমুচিত জবাব দেবে।

আমরা সংঘাতে বিশ্বাসী নই। এ দেশের মানুষ শান্তিকে আলিঙ্গন করে বাঁচতে ভালোবাসে। তার মানে এই নয় যে, আমরা দুর্জনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে দাঁড়াতে জানি না। প্রতিরোধে দাঁড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনার ইতিহাস আমাদের আছে। সম্ভবত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে আমাদের আরো বেশি সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক তাদের মেধা ও মনন দিয়ে অনুধাবন করছে।

অনুধাবন করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং। তিনি মিয়ানমারের আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে চুক্তি সম্পাদনের পরও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।’ প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন বাংলাদেশের মানুষও সেই একই কথা বলছে। সুতরাং মিয়ানমারের পরিকল্পিত অনৈতিক কাজের একটি সমুচিত জবাব দেওয়ার সময় এসেছে এবং যা এ মুহূর্তেই শুরু হতে পারে।

আমরা মনে করি, মিয়ানমারের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের বাইরে এ সমস্যা সমাধানের আর কোনো পথ খোলা নেই। চলমান দ্বি অথবা ত্রিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি এ পদক্ষেপের জন্য মিত্রদের নিয়ে গোটা বিশ্বকে একীভূত করার কাজে এগিয়ে যেতে হবে। সমগ্র বিশ্ব শুরু থেকেই মিয়ানমারের এই অনৈতিক কাজের বিরোধিতা করে এসেছে। তাদের এই চিন্তাকে আরো শানিত করার কাজ বাংলাদেশকেই করতে হবে।

জাতিসংঘেও বিষয়টি অনেকটা এগিয়ে আছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের সর্বত্র দেন-দরবার বাড়ালে আমরা একটি ইতিবাচক ফল লাভ করতে পারি বলেই আমাদের বিশ্বাস। আমরা আমাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখতে চাই।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মিয়ানমার,রোহিঙ্গা,রোহিঙ্গা ইস্যু,রোহিঙ্গা শরণার্থী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist