সম্পাদকীয়

  ১১ মার্চ, ২০১৮

আন্দোলনের হুমকি

বুয়েটের সুপারিশ উপেক্ষা করে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকরা

রাষ্ট্রে গণমানুষের কল্যাণে আন্দোলন। বেশির ভাগ মানুষই বলবে, সমর্থন করি। কিন্তু সে আন্দোলন যদি অকল্যাণের দিকে গড়ায়—তখন? না, তাকে সমর্থন করা বিবেকবান কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে সে দেশের সরকারের পক্ষেও সে আন্দোলন মেনে নেওয়া সম্ভব নয়—এটাই আমাদের বিশ্বাস।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সুপারিশ উপেক্ষা করে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকরা। তাদের দাবি, ভালো অবস্থায় থাকা অটোরিকশার আয়ু তিন বছর মেয়াদ বাড়াতে হবে। আর পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ শেষে বুয়েট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭৭ শতাংশ অটোরিকশা চলার অবস্থাতে নেই। ১৫ বছর ধরে চলা অটোরিকশার আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। এর আয়ুষ্কাল আর বাড়ানো উচিত নয়।

অটোরিকশার মালিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদনকে কোনো ধরনের আমলে না নিয়ে সরকারি নির্দেশকেও উপেক্ষা করছেন। তারা বলছেন, সাড়ে ২৬ হাজার অটোরিকশার মধ্যে ৩৬টি পরীক্ষা করে বুয়েট মেয়াদ না বাড়ানোর মতামত দিয়েছে। তাদের মতে, সব অটোরিকশার অবস্থা খারাপ নয়। যেগুলো চলাচলের উপযোগী, সেগুলোর মেয়াদ আরো তিন বছর বাড়াতে হবে।

এখানেই প্রশ্ন! কোনগুলো চলাচলের উপযোগী, তা নির্ণয় করার দায়িত্ব কার? এ দায়িত্ব কি অটোরিকশার মালিকরা পেয়েছেন। যদি পেয়ে থাকেন, তাহলে কোন যোগ্যতার বলে তারা এ দায়িত্ব পালনের যোগ্য হয়ে উঠেছেন? তবে, তারা যে যোগ্য, এ ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। তাদের একমাত্র যোগ্যতা, ‘আন্দোলনের হুমকি’। আর এ ওষুধ যে লাইফ সেভিং ড্রাগের মতো কার্যকর, তা এ দেশের মানুষ বহুবার দেখেছে। এবারও তার ব্যত্যয় হবে বলে মনে করার কোনো যৌক্তিক কারণও নেই।

পনেরো বছরের পুরোনো অটোরিকশার মেয়াদ না বাড়ানোর পরামর্শ বুয়েটের। সম্ভবত পরামর্শ পরামর্শের জায়গাতেই থাকবে। অটোরিকশা আগের মতোই চলাচল করবে। আলামতটা সে ধরনের। বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী শিগগিরই অটোরিকশা প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে। পাশাপাশি অটোরিকশার মালিকদের দাবির প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখেই তাদের দাবি করা সময় কমাতে এবং প্রক্রিয়া সহজ করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চেয়েছে বিআরটিএ।

বিআরটিএর সূত্র মতে, ২০০২ সালে ৮ হাজার ৪২৪টি নিবন্ধিত অটোরিকশার আয়ুষ্কাল শেষ হয় ২০১১ সালে। পরে চার দফায় ছয় বছর তিন মাস সময় বাড়ানো হয়। এগুলোর মেয়াদ শেষ হবে চলতি মাসেই। আর ২০০৩ সালে নিবন্ধিত ২৮ হাজার ২২৪টি অটোরিকশার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে। এখন দেখার বিষয়, বিষয়টি কীভাবে মীমাংসিত হয়। আমরা মনে করি, আপামর জনগণের কল্যাণের দিকেই রায় হবে এবং আমরা বলতে পারব, অনৈতিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনতার জয় হয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আন্দোলন,সিএনজিচালিত অটোরিকশা,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist