reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

একুশ আমার অহংকার

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল পাকিস্তানের জন্মলগ্নের অনেক আগেই। তবে জন্মের পর তা পূর্ণতা পায় পাকিস্তানের জাতির জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার মধ্য দিয়ে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’। এই ঘোষণার বিপরীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ বুলন্দ আওয়াজ এবং কোরাসকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘না..., আমরা মানি না’। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকেই বলেছিলেন, ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলে যাই হোক না কেন বাংলাদেশে বাংলাই হবে সরকারি ভাষা।

পরবর্তীতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রশ্নে লাহোর প্রস্তাবের ভ‚মিকাও কম নয়। বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষাবিষয়ক স্বপ্ন পূরণের এক মহা-সুযোগ এনে দেয় ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত ভ‚বাগ এবং হিন্দু অধ্যুষিত অবশিষ্ট অংশ যে প্রস্তাব উত্থাপন করে তা শুধু উপমহাদেশের স্বাধীনতার পথকেই উন্মুক্ত করেনি, বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথকেও সুগম করে। ’৪৭-পরবর্তী সময়ে তমদ্দুন মজলিসের ভ‚মিকাও প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।

বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন ছিল বাংলা ভাষাভাষীদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৫২ সালের এক রক্ত স্নাত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যার আত্মপ্রকাশ। এবং এই আন্দোলনের নির্যাস থেকে বেরিয়ে আসা বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিণতি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ এবং একটি নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব। বিশ্বের মানচিত্রে যার নাম বাংলাদেশ; যা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম জাতি রাষ্ট্র। যে রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল একুশের শহীদ মিনার নির্মাণের মধ্য দিয়ে।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা এই দীর্ঘ সময়েও আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশকে ভালোবাসতে শিখিনি। যাদের দায়িত্ব ছিল দেশের মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধু করা, তারা তাদের দায়িত্ব পালনে চ‚ড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থ হয়েছেন বলে আজও আমাদের দেখতে হচ্ছে সেই একই দৃশ্য। যে শহীদ মিনারকে আমরা আমাদের স্বাধীনতার ভীত বলে মনে করি, স্বাধীনতার সূতিকাগার বলে স্বীকার করি-সেই মিনারের প্রতি এত অবজ্ঞা দেখানোর সাহস কোথা থেকে আসে? আমরা জুতা মেরে গরু দান করাকে ঘৃণা করি। সারা বছর পবিত্র শহীদ মিনারে কুকুর-বিড়াল, গরু-ছাগল আর মাদকাশক্তদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে দেখার পর একুশের আগমুহূর্তে পরিচ্ছন্নতার মহড়া দেখি তখন বাধ্য হয়ে বলতেই হয়, আপনাদের অভ্যাস পরিবর্তন করুন। জুতা মেরে গরু দানের কোনো প্রয়োজন নেই। শ্রদ্ধা জানাতে না পারেন, অন্তত অপমান করার সাহস দেখাবেন না।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
একুশ,অহংকার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist