৮৫ বছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত
জন্মদিনে শুভেচ্ছায় সিক্ত
৮৪ বছর শেষ করে ৮৫ বছরে পা রাখলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করলেন মন্ত্রণালয় ও এর বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কল্যাণ সমিতির নেতা ও সদস্য অর্থমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান।
সাত যুগ পার করে আসা মুহিত কিন্তু এখনও ভীষণ সক্রিয় মানুষ। তিনি ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন বলে জানিয়েছেন নিজে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রায়ই মুহিতের কর্মতৎপরতার উদাহরণ দেন। ১৯৩৪ সালে সিলেটে জন্ম নেয়া ছেলেটির পরিবার আগে থেকেই ছিল রাজনীতিতে। বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন জেলা সে সময়ের প্রভাবশালী দল মুসলিম লীগের নেতা। মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মুসলিম লীগ এ দেশের মানুষের স্বার্থের বদলে পশ্চিম শাসকগোষ্ঠীর পদলেহন শুরু করায় পাল্টে যায় মুহিত ও তার পরিবারের রাজনৈতিক দর্শন। পরে মুহিত ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হয়ে উঠেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের কূটনীতিক থাকাকালে পক্ষত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য ঘোষণা করে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করার পর অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডে উচ্চশিক্ষা নেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেয়ার পর তখনকার পাকিস্তান এবং পরে স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় মুহিত ওয়াশিংটন দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বে ছিলেন। জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে পরিকল্পনা সচিবের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭৭ সালে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের সচিব হন মুহিত। ১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ শুরু করেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও আইএফএডি-তে। ১৯৮২-৮৩ সালে তখনকার এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন মুহিত।
এরপর দীর্ঘদিন বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করার পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন মুহিত। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুহিত। মোট ১১ বার ও টানা নয়বার বাংলাদেশের বাজেট ঘোষণা করার রেকর্ড রয়েছে তার। মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ৩০টির অধিক বই লিখেছেন মুহিত। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুহিতকে ২০১৬ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় মুহিতকে।
পিডিএসও/হেলাল