দিদারুল আলম জিসান, রামু (কক্সবাজার)
রামুতে পাহাড় কেটে বহুতল ভবন, বন বিভাগের নীরবতা
কক্সবাজারের রামুতে সড়কের পার্শ্ববর্তী রাজারকুল রেঞ্জের আওতায় বন বিভাগের পাহাড় কেটে সরকারি জমি দখল করে শত শত স্থাপনা তৈরী করা হচ্ছে। একটি প্রভাবশালী চক্র বন বিভাগের সহযোগিতায় এসব জমি বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, এ নিয়ে পুরো এলাকায় তোলপাড় শুরু হলেও বন বিভাগের রহস্যজনক নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা অফিসে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ফরেস্ট গার্ড মুহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সোনাই ছড়ি যাওয়ার পথে রাস্তার উপরে পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা সদস্য পরিচয়ে আব্দু রহমানের নির্মাধীন বাড়ির কাজ বন্ধ করে দিই। পরের দিন আবার দিগুন শ্রমিক বাড়িয়ে পাহাড় কাটা শুরু করে আব্দু রহমান।
সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, পাহাড় কেটে নলকুপ বসানোর কাজ চলতেছে। এব্যপারে রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তাকে পাহাড় কাটার সচিত্র ছবি ও ভিডিও দেখানো হয়।
পাহাড় কাটার সমস্ত ছবি দেখে রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ জলিলুর রহমান বলেন, আমি সঠিকভাবে জানিনা আমাদের সরকারি বন বিভাগের এলাকা কতটুকু। অনেক জায়গা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং বন সংরক্ষক কক্সবাজার জেলায় রামুতে খাস করে ফেলেছে। তাই আমাদের পাহাড় কাটলেও বাধা দেয়া সম্ভব হয় না।
এদিকে পাহাড় কেটে হাবিবুল্লাহর বাড়ি নির্মাণের ব্যপারে স্থানীয়রা অভিযোগ করলে ফরেস্ট গার্ড মুহিউদ্দিন বলেন, আমরা নাপিতা কাটা হাবিবুল্লাহকে পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণের কাজ না করার জন্য বাধা দিই কিন্তু তিনি আমাদেরকে বলেন তার খতিয়ানের জায়গায় কাজ করতেছি। তার কাছে খতিয়ানের ফটোকপি চাইলে পরে দিবে বলে চলে যান।
স্থানীয় এক মেম্বার বলেন, এটা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট, এখানে কোন খতিয়ানের জায়গা নাই। এটা সরকারি বনবিভাগের পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধভাবে।
তিনি আরো বলেন, সত্তর হাজার টাকা বন কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে সম্পূর্ন অবৈধভাবে সরকারি পাহাড় কেটে ছয়রুম করে পাচঁতলা বহুতল ভবন নিমার্ণ করতেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দিয়ে বন কর্মকর্তারা কৌশলে এসব জমি লোকজনকে বিক্রি করে আসছে। সম্প্রতি এখানে কয়েকশ স্থাপনা নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। অতিসত্বর অভিযান চালিয়ে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ না হলে সরকারের বেশির ভাগ জায়গা বেদখলে চলে যাবে।
রামু উপজেলার রাজারকুল রেঞ্জ অফিসের সামনে দিয়ে রামু-মরিচ্যা সড়কের পাশে বন বিভাগের লোকদের লাখ লাখ টাকা উৎকোচ দিয়ে মূল্যবান এসব জমি জবর-দখলের পাশাপাশি এখানে থাকা বিপুল পরিমান গাছও কেটে সাবাড় করেছে দখলবাজ ভূমিগ্রাসীরা।
দেখা গেছে, কাঠাঁলিয়া ঘোনার পাড়ার মূখ আরকান সড়কের পাশ্বে লতি কাঞ্চন বড়ুয়ার ছেলে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে পিকআপ গাড়িতে ইট ভাটায়। পাহাড়ের মাটি কাটার পরে সমতল ভূমিতে তৈরি করবে ইটের পাকাঁ বাড়ি। এভাবে রেঞ্জ কর্মকর্তা, বিট কর্মকর্তা আর ফরেস্ট গার্ডদের ঘুষ দিয়ে সরকারি পাহাড় কেটে সড়কের পাশে বিরাট এলাকাজুড়ে চলছে বন বিভাগের জায়গায় অবৈধভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণ ও গাছপালা নিধনের দৃশ্য। পাহাড় ও গাছ কেটে সরকারি জমিতে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে পাচঁলার মত বহুতল ভবন ও পাকা টিনসেট ঘর, আদা পাকা ঘর এবং সেমিপাকা বসত বাড়ি।
পিডিএসও/রিহাব