রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
পাউবোর জমি দখল করে প্রভাবশালীর ভবন নির্মাণ
রূপগঞ্জের হাটাবো বাড়ৈইপাড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ) কোটি টাকার জমি দখল করে এক প্রভাবশালীর ভবন ও গরুর খামার নির্মাণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত এপ্রিল মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ঐ দখলদারকে নোটিশ প্রদান করার পরও তার টনক নড়েনি। উল্টো পাউবোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে তোড়েজোরে সুবিশাল অট্রালিকার কাজ চালাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের হাটাবো বাড়ৈইপাড়া ফুটব্রীজ সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ) কোটি টাকার জমি স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রহমান দখল করে ভবন নির্মাণের কাজ করছে। শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়, আব্দুর রহমান সরকারী জমিও দখলে নিচ্ছে। এসব জমি দখলে তার রয়েছে ১৪ জনের বাহিনী। এ বাহিনী দিনে-রাতে অস্ত্র প্রদর্শণ করে দাপিয়ে বেড়ায়। জমি দখল করতে গিয়ে সে অনেক সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছেন। জবরদখল আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বদৌলতে গত কয়েক বছরের ব্যবধানে সে কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ হাফ ডজন মামলা রয়েছে। চাঁদাবাজি মামলায় সে সম্প্রতি এক সপ্তাহ কারাভোগ করে।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটাবো পূর্বপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহমান একজন জমির দালাল। একসময় সে জমির ব্যবসায় জড়িত ছিলো। বর্তমানে সে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারী খাস জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা গড়ে তোলে। পরে এসব স্থাপনা বিক্রিও করে বলে এলাকাবাসীরা জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিক্তিতে পাউবোর তৎকালীন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে (এনএনআইপি শাখা-২) একটি প্রতিনিধিদল গত এপ্রিল মাসে হাটাবো এলাকায় পরিদর্শন করেন। পরে জবরদখলের ঘটনার সত্যতা মিললে ঐ উপ-সহকারী অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা অপসারণের জন্য দখলদার আব্দুর রহমানকে সাতদিনের সময় দিয়ে ২৩ এপ্রিল নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ প্রদানের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ঐ দখলদারের টনক নড়েনি। উল্টো সে পাউবোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে তোড়েজোড়ে ৫ তলা ভবন ও গরুর খামার নির্মাণ করছে।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারী জায়গা দখল করে গড়ে তোলা গরুর খামারের বর্জ্য ফেলার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় কৃষি জমিতে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। কৃত্রিম বন্যার কারণে অনেক ফসলি জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমার পৈতৃক জমিতে ভবন নির্মাণ করছি। এখানে কারো মাথাব্যথার কথা নয়।’ পাউবোর নোটিশ প্রসঙ্গ টানলে তিনি বলেন, ‘তারা কি হিসেবে নোটিশ দিয়েছে আমার জানা নেই। যদি পাউবোর জায়গা দখল করে থাকি তাহলে তারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেউক।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য মো. পন্ডিত মিয়া বলেন, ‘ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখলকারী আব্দুর রহমানকে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ নোটিশকে আব্দুর রহমান কোন তোয়াক্কা না করে তার মার্কেটের নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’
পিডিএসও/রানা