reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

র‌্যাম্প মডেল থেকে জঙ্গি নেতা

রাজধানী বনশ্রী থেকে ২৯ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব বলেছে, মেহেদী হাসান নামের এক সময়ের ওই র‌্যাম্প মডেল এখন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির একজন ‘প্রথম সারির নেতা’।

ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করা মেহেদীর বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। তার বাবা খোরশেদ আলম পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত এএসআই।

র‌্যাব বলছে, ছাত্র অবস্থায় মেহেদী নামে মডেলিং করতেন ওই যুবক। লেখাপড়া শেষ করে শুরু করেন ব্যবসা। জঙ্গিবাদে জড়ানোর পর ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিল নাম নিয়ে তিনি সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, সে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বিগ্রেড আদ-দার-ই কুতনীর কমান্ডার। তাকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলাম।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিনের নেতৃত্বেই বুধবার গভীর রাতে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মেহেদীর বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা ও বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন ওই অভিযান ও মেহেদীর বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদী বলেছেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। তার বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট এবং উগ্রবাদী বই জব্দ করা হয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত থেকে জানা যায়, ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী অপারেশনাল সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং যে কোনো স্থানে নাশকতা চালাতে সক্ষম।

র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতবছর অক্টোবরে র‌্যাবের অভিযানের মধ্যে পালাতে গিয়ে নিহত হন জেএমবির তখনকার আমির সারোয়ার জাহান ওরফে আবু ইব্রাহিম আল হানিফ, যিনি তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে জেএমবির নতুন অংশটিকে সংগঠিত করেন। সারোয়ারের বাসায় পাওয়া আলামত থেকে এই সংগঠনের দুটি ‘সামরিক ব্রিগেড’ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’ হলি আর্টিজান বেকারিসহ বিভিন্ন হামলায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে। আর তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী’ গোপনে কর্মী সংগ্রহের পাশাপাশি ‘রিজার্ভ ফোর্স’ হিসেবে ছিল বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ‘বদর স্কোয়াড’ দুর্বল হয়ে গেলে ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী’ সদস্য সংগ্রহ করে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করে।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব কর্মকর্তারা জেএমবির এই ব্রিগেডের বিষয়ে নতুন তথ্য পায়। তখনই জানা যায়, ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিল নামের এক নেতার নেতৃত্বে ওই ব্রিগেড নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে।

র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে নিহত জঙ্গি নিবরাসসহ কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গির সঙ্গে মেহেদীর ‘প্রত্যক্ষ যোগাযোগ’ ছিল। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি সদস্যদের ‘বাইয়্যাত’ (শপথ) দিতেন এবং তার ভিডিও বিভিন্ন উগ্রবাদী চ্যানেলে প্রচার করতেন। সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদাও সংগ্রহ করতেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনীর বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ কিছু সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার মেহেদীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
র‌্যাম্প,মডেল,জঙ্গি নেতা,মেহেদী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist