কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
মোবাইল চুরি : কুষ্টিয়ায় গাছে বেঁধে শিশু নির্যাতন
কুষ্টিয়া কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় মোবাইল চুরির অপবাদে আম গাছের সঙ্গে বেঁধে দুই শিশুকে বেধড়ক পিটিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ছবি স্থানীয় এক ব্যক্তি তার মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করে তা ফেসবুকে আপলোড দেয়। আপলোড দেয়ার পর ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
এ ঘটনায় কুষ্টিয়াজুড়ে তোলপাড় চলছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার নির্যাতিত শিশু জুয়েলের বড় ভাই রবজেল খান বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় নির্যাতনকারী তানজিল, শাশুড়ি রোকেয়া খাতুন ও মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৯, ধারা-৩৪২/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৫০৬/৩৪।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই শিশুর পরিবার জানায়, ৪-৫দিন আগে কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার চরমণ্ডলপাড়া এলাকার রূপালী নামে এক নারীর মোবাইল ফোন চুরি হয়। ওই ঘটনায় তারা একই এলাকার ৭ বছরের এতিম শিশু জুয়েল ও আসিফকে সন্দেহ করে। গতকাল বিকেলে একই এলাকার প্রভাবশালী তানজিল ও মীর আক্কাস ওরফে মিরু তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তানজিলের শ্বশুর বাড়ির সামনে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। শিশু দুটি মোবাইল চুরির কথা অস্বীকার করলেও তাদেরকে মারপিট করা হয়। পরে শিশু আসিফের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আসিফকে ছেড়ে দেয় তারা। বেধড়ক মারপিটের কারণে শিশু জুয়েল গুরুতর আহত হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার হুসাইন মহম্মদ শিহাব জানান, শিশুটির শরীরের কয়েকটি স্থানে চাপা রক্ত জমাট বাধার চিহৃ রয়েছে।
চাপড়া ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য নুর মহম্মদ জানান, নির্যাতনের ভিডিওটি গতকাল রাতেই দেখেছি। এ ব্যাপারে নির্যাতিত ওই শিশুর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বলা হয়েছে। কুমারখালী থানা পুলিশ এ ঘটনার অন্যতম হোতা ছেঁউড়িয়ার চর মণ্ডলপাড়ার তানজিল ও তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুনকে গতকাল রাতে গ্রেফতার করেছে। তবে এ ঘটনার অপর হোতা মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। নির্যাতিত শিশু জুয়েল চর মণ্ডলপাড়া গ্রামের সিরাজুলের ছেলে এবং আসিফ একই এলাকার নিশানের ছেলে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক জানান, নির্যাতিত শিশুটির পরিবার মামলা করতে চাননি। আমরা তাদেরকে থানায় ডেকে নিয়ে এসে পাশে দাঁড়িয়ে মামলা করিয়েছি।
পিডিএসও/হেলাল