বাগেরহাট প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
ডাক্তারের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা সদরে অবস্থিত পরিত্রাণ ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিৎকিসকের অবহেলায় একটি নবজাতক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের মীর জুলফিকার আলী লুলু অডিটরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নবজাতকের পিতা বাগেরহাট সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদার। এ সময় নবজাতকের মা লাকি বেগমসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান হাওলাদার বলেন, আমার স্ত্রী লাকী বেগম ওরফে ময়না গর্ভবতী হলে আমি পার্শ্ববর্তী ফকিরহাট উপজেলার ব্রাক্ষ্মণ রাকদিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে আমার স্ত্রীকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য নিয়ে যাই। এরমধ্যে স্ত্রীর গর্ভাবস্থা ৩৫/৩৬ সপ্তাহ চলাকালীন অসুস্থ বোধ করলে তাকে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্টাস্নো করি এবং সবকিছু স্বাভাবিক আছে বলে জানতে পারি। পরে আমার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা দেখা দিলে গত ২৭/০৬/১৭ তারিখে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে স্বাভাবিক ডেলিভারিতে জটিলতা দেখা দিলে তাদের পরামর্শে আমার স্ত্রীকে ফকিরহাট সদরে অবস্থিত পরিত্রাণ ক্লিনিকে নিয়ে যাই। এ সময় ক্লিনিক মালিক ডা. মোস্তফা হাসান ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম আমার স্ত্রীর স্বাভাবিক ডেলিভারি করবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং আমার স্ত্রীর নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করতে থাকেন। একপর্যায়ে আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পার্শ্ববর্তী খুলনার রুপসা এলাকার একজন ডাক্তারকে দিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর ডেলিভারীর ব্যবস্থা করেন। অপারেশনের পর আমাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি তখন এ বিষয়ে ডা. মোস্তফা হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে শুধু সিজার করার কন্ট্রাক্ট নিয়েছি বাচ্চার নয় বলে গালমন্দ করে বাচ্চা নিয়ে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। নিরুপায় হয়ে আমি খুলনা শিশু হাসপাতালে আমার বাচ্চাকে ভর্তি করি। সেখানে চিৎকিসাধীন অবস্থায় আমার শিশুটি মারা যায় বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহজাহান হাওলাদার।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজান হাওলাদার বলেন, খুলনা শিশু হাসপাতালের কর্মরত চিৎকিসকরা আমাকে জানায়, নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য আমার শিশুটির মাথা ধরে টানা হেঁচড়া করা হয়েছে। যার ফলে তার মস্তিস্কের অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে প্রদাহ ও মস্তিস্কে রক্তপাত হয়ে মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিত্রাণ ক্লিনিকের মালিক ডা. মোস্তফা হাসান বলেন, আমার ক্লিনিকে শাহজহান হাওলাদারের স্ত্রীকে যখন ভর্তি করা হয় তখন তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। আমি তাকে নরমাল ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিইনি। যেকোনোভাবেই তাদের বাচ্চার মাথায় আঘাত লেগেছিল। যার ফলে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। আমারা শুধু অপারেশন করে ডেলিভারি করেছি। এ ঘটনার সাথে আমি বা আমার স্ত্রীর সম্পর্ক নেই। আমাকে হয়রারি হরার জন্য শাহজানার আমার নামে মিথ্যা কথা বলছে।
পিডিএসও/হেলাল