অডিও ফাঁস
‘আর্মির লোক পরে টানাটানি করে কিনা’
সাবেক মেজর সিনহাকে নিয়ে ওসি প্রদীপের কথোপকথন
গুলিতে নিহত সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মরদেহের ময়নাতদন্তে চারটির বেশি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর আগে সুরতহাল প্রতিবেদনে মরদেহে ছয়টি গুলির চিহ্ন পায় পুলিশ।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেছেন, সেই রাতে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী চারটি গুলি ছোড়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মৃত্যু নিশ্চিত করতে সিনহাকে আরও দুটি গুলি করেন।
মেজর সিনহার মৃতুর পর একজন পদস্থ ব্যক্তির সাথে কথা বলেন। যিনি ওসি প্রদীপকে এই হত্যাকাণ্ড থেকে পরিত্রাণের উপায় বাতলে দেন। ওসি প্রদীপের অডিও ক্লিপস ফাঁস হয়েছে।
ওসি প্রদীপ ও পরামর্শদাতার কথোকথন তুলে ধরা হলো—
পরামর্শদাতা : হ্যালো।
ওসি প্রদীপ : স্যার, আদাব স্যার।
পরামর্শদাতা : হ্যা।
ওসি প্রদীপ : স্যার আমি ওসি টেকনাফ প্রদীপ, স্যার।
পরামর্শদাতা : হ্যা, কি খবর। প্রদীপ কোরবানির দিন গরুর মধ্যে তুমি কি!
ওসি প্রদীপ : স্যার, একটা মহাবিপদে পড়ছি, আপনার সাহায্য দরকার।
পরামর্শদাতা : বলো বলো।
ওসি প্রদীপ : এখন আমরা স্যার একটা ১৫৩, ১৮৬ ও ৩০৭-এ মামলা নিছি স্যার।
পরামর্শদাতা : ওয়ান ফিফটি থ্রি?
ওসি প্রদীপ : স্যার, থ্রি ফিফটি থ্রি।
পরামর্শদাতা : থ্রি ফিফটি থ্রি সরকারি কর্মচারীর কাজে বাধা, আরেকটা হচ্ছে...
ওসি প্রদীপ : আরেকটা হচ্ছে ১৮৬ পুলিশের কাজে বাধা।
পরামর্শদাতা : আর্মিদেরকে ইন্টিমেশন দিছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : এরপরে দিসি স্যার আমরা। আর্মিরে জানাইসি। আর্মির লোকজন আসছে, সবাই আসছে।
পরামর্শদাতা : এ কি আর্মির নাকি?
ওসি প্রদীপ : অবসরপ্রাপ্ত স্যার ।
পরামর্শদাতা : ও তাইলে এত ডরের কি আছে?
ওসি প্রদীপ : এখন স্যার ও মারা গেছে, ইনজিওরড অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছে।
পরামর্শদাতা : এর সঙ্গে যে লোকটা ছিল ওইটা কি?
ওসি প্রদীপ : ওইটা স্যার একটা ছাত্র, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির। সে বলছে যে, আমরা রাতের বেলা পাহাড়ের সিন নেওয়ার জন্য... ওরা নাকি স্যার ইউটিউবের একটা চ্যানেল করার জন্য আসছে ভ্রমণের উপরে।
পরামর্শদাতা : তোমরা তো অবস্ট্রাকশন দিছ, অবস্ট্রাকশন ভায়োলেট কইরা গেছে, গাড়ি চালাইছে। গাড়িওয়ালারে এরেস্ট করছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : স্যার, গাড়িচালক তো ও নিজেই।
পরামর্শদাতা : ও আচ্ছা আচ্ছা, গাড়ি জব্দ করছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : জি স্যার করছি।
পরামর্শদাতা : আচ্ছা তোমরা যে বাধা দিছ, ওভারটেক কইরা গেছে, এইটার সাক্ষী আছে কিনা পাবলিক?
ওসি প্রদীপ : সাক্ষী আছে স্যার।
পরামর্শদাতা : সাক্ষী থাকলে মামলা কী নিছ বলো।
ওসি প্রদীপ : মামলা নিছি স্যার ১৮৬, ৩৫৩, ৩০৭।
পরামর্শদাতা : প্রেয়ার দিয়া দিবা যে, একটা মার্ডার হইয়া গেছে।
ওসি প্রদীপ : আর আলাদা কোন কেস দিতে হবে না স্যার?
পরামর্শদাতা : আরেকটা কেস কি নিবা?
ওসি প্রদীপ : আরেকটা কেস আমরা কী নেবো? ও যে সদর হাসপাতালে মারা গেছে স্যার। সদর হাসপাতালের বিষয়ে একটা ইউডি কেস নিয়ে নেবো স্যার?
পরামর্শদাতা : আমার তো মনে হয়, সদর থানারে দিয়া একটা ইউডি কেস করাই রাখ।
ওসি প্রদীপ : ভালো হবে, না স্যার?
পরামর্শদাতা : আমার মনে হয় ভালো হয়। আর্মির লোক তো পরে টানাটানি করে কিনা!
আর নাইলে তো...
পিডিএসও/হেলাল