কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ১৪ জুলাই, ২০২০

কালিয়াকৈরে ২ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনকে তৎকালিন ভূমি প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে ভূমি মন্ত্রী একই অফিসে ৬২ হাজার টাকাসহ হাতেনাথে ধরেন। পরে মোহাম্মদ আলী হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন ও একই অফিসের জয়নাল আবেদিন নামে আরেক কর্মচারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

মন্ত্রীর হাতে গত ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল বরখাস্ত হলেও কার খুঁটির জোড়ে সেই কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেন আবার সফিপুর ভূমি অফিসে গত আট মাস ধরে দাপ্তরিক কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই যাচ্ছেন।

ভুক্তভোগি জমির মালিক ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদ আলী হোসেন গত আট মাস পর অফিসে যোগদানের পর পরই নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ভূমি অফিসে খাজনা আটকে দেয়া, খাজনার টাকা অতিরিক্ত আদায় করে রশিদে কম টাকা তুলে দেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের এক ওমেদার জানান, সফিপুর মৌজায় প্রতি শতাংশ জমির ভূমিকর ৪০টাকা হলেও উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সোহেল মামুন, ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনের সাথে যোগসাজসে ৫টাকা করে রশিদ দিচ্ছেন। কিন্তু ৫টাকা হারে রশিদ দিলেও খাজনা বাবদ নেয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ফলে সরকার হাজার হাজার টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিলম্বে সফিপুর মৌজার অধিকাংশ ভূমি মালিকরা ওই দুই কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, কৌজাকুঁড়ি মৌজার ৪৭৯৭ থেকে ৪৭৯৯ জোতের পুরো বলিয়ামের পাতাই ছেড়ে ফেলা হয়েছে। ওই জোতের মালিকরা খাজনা দিতে আসলে তারা খাজনা নিতে পারবেন না বলেও জানান। ওই সব জোতের মালিকদের পুনরায় খারিজ করতে বলা হয়েছে।কালিয়াকৈর এসিল্যান্ড থেকে সিরিয়ালে খারিজের প্রস্তাব আসলেও তদন্ত না করেই যারা মোটা অংকের টাকা দেয় তাদের প্রস্তাব নিস্পিত্তির জন্য এসিল্যান্ড অফিসে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার জমির খারিজ প্রস্তার বিনা কারণেই বাতিল করে দেয়া হয়।

সফিপুর মৌজায় ৩৬১২ নং জোতে ২০শতাংশ জমির দলিলে চার একর ৪শতাংশ জমি খারিজ করে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা সোহেল মামুনের বিরুদ্ধে। ওই ভূমি কর্মকর্তা ‘ক’ তফসিলের ৫ শতাংশের দলিলে ৭৮ শতাংশ জমি খারিজ দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

শাকাশ্বর এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, ওমেদারের মধ্যমে ৮০ শতাংশ জমির খারিজের জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। তবে খাজনা দিতে মোটা অংকের টাকা দাবি করছে সোহেল মামুন।

ভূমি কর্মকর্তা মোহাহাম্মদ আলী হোসেন ও ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সোহেল মামুন জানান, ভাই খবর ছাপায়েন না। পত্রিকায় খবর ছাপলে আমাদের মারাত্নক ক্ষতি হয়ে যাবে।

কালিয়াকৈর ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. আদনান চৌধুরি জানান, ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উপস্থাপিত হলে খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কালিয়াকৈর,ভুমি কর্মকর্তা,অনিয়ম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close