ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

  ১৮ মে, ২০২০

ধামরাইয়ে সরকারি রাস্তা কেটে জমি ভরাট

বাধা দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্চিত

ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের রৌহারট্রেক এলাকায় পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশ কেটে জমি ভরাট করায় বাধা দিলে সুয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার সকাল ১১টায় সুয়াপুর ইউনিয়সের রৌহারট্রেক এলাকায় রাস্তা কেটে জমি ভরাট করার সময় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় মাটির ব্যবসায়ী তারু মিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনকে লাঞ্চিত করার কারণে চেয়ারম্যান ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে সোনা মিয়ার জমিন ভরাট করার চুক্তি নিয়ে সাবেক মেম্বার তারু মিয়া ভেকু দিয়ে কার্পেটিং রাস্তার পশ্চিম পাশে থেকে মাটি কেটে সোনামিয়ার জমি ভরাট করতে ছিলেন। এ সময় এলাকার লোকজন মাটি কাটতে বাধা দিলে তিনি বাধা উপেক্ষা করে মাটি কাটতে থাকেন। পরে এলাকার লোকজন মিলে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুর ইসলামকে জানালে মেম্বার নিজে এসে বাধা দেন। কিন্তু সাবেক মেম্বার তারু মিয়া মেম্বারের কথা কর্ণপাত না করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে থাকেন। পরে মেম্বার নুর ইসলাম বিষয়টি সুয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনকে জানান। এরপর চেয়ারম্যান সোহরাব নিজে সেই রাস্তা কাটার স্থানে গিয়ে তারু মিয়াকে মাটি কাটা বাধা দেয়। এতে তারু মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে বিভিন্নভাবে গালিগালাচ করে এবং চেয়ারম্যানের গেঞ্জি ধরে টানা হেছড়া করে। পরে এলাকার উত্তেজিত জনতা মিলে তারু মিয়াকে মারপিট করে। এই ঘটনা চেয়ারম্যান ইউএনও বরাবর একটি অভিযোগ দেন। পরে ইউএনও সোমিউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জমির মালিক সোনা মিয়ার ছেলে লোকমানকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আটক করে নিয়ে আসেন।

এ ব্যাপারে জমির মালিক সোনা মিয়া বলেন, আমি রাস্তার পাশের জমি ভরাট করে বাড়ি করার জন্য মাটির ব্যবসায়ী তারু মিয়াকে চুক্তি দেই। তারা মিয়া চুক্তি অনুযায়ী মাটি ভরাট করে। কিন্তু রাস্তার মাটি দিয়ে জমি ভরাট করার ব্যাপারে আমি জানতাম না।

সাবেক মেম্বার তারু মিয়া বলেন, আমি সোনা মিয়ার জমি ভরাট করার জন্য চুক্তি নেই। কিন্তু রাস্তার মাটি কেটে জমি ভরাট করিনি। আমি ট্রাক দিয়ে মাটি এনে ভরাটের কাজ করছিলাম। এই সময় চেয়ারম্যানের বাহিনীরা আমাকে মারপিট করে। কারণ আমার অপরাধ আমি চেয়ারম্যানের কাছে চার লাখ টাকা পাই। সেই টাকা চাওয়ার কারণে চেয়ারম্যান আমাকে মারপিট করে।

৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুর ইসলাম বলেন, আমি নিজে গিয়ে রাস্তার পাশে মাটিকাটা বাধা দেই। কিন্তু তারু মিয়া আমার বাধা উপেক্ষা করে মাটি কাটে। পরে আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যান নিজে ঘটনাস্থলে আসে এবং মাটি কাটা বাধা দেয়। সেই সময় তারু মিয়া চেয়ারম্যানকে গালিগালাচ করে। পরে এলাকার লোকজন সেটা থামিয়ে দেয়।

সুয়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, আমি খবর পেয়ে মাটি কাটার স্থানে গিয়ে দেখি তারু মিয়া মেম্বারের কথা না শুনে নবনির্মিত রাস্তার পাশে থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে জমি ভরাট করছে। তখন আমি তাকে বাধা দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সাথে খরাপ আচরণ করে। কারণ সামনে বৃষ্টি হলে রাস্তা ভেঙে যাবে। তখন জনগণের চলাচল অসুবিধা হবে। সেই জন্য এলাকার লোকজন আমাকে বললে আমি বাধা দেই।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সামিউল হক বলেন, রাস্তা কেটে জমি ভরাটের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জমির মালিকের ছেলে লোকমানকে ধরে নিয়ে আসি। পরে রাস্তা ভরাটের বিষয়ে একটি মুছলেখা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেই।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জমি ভরাট,ধামরাই,লাঞ্চিত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close