reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ মার্চ, ২০২০

যশোরে কোটি টাকার বাড়ি

আর কোনও সংবাদ না করতে অনুরোধ নাজিমের!

কুড়িগ্রামের আলোচিত আরডিসি নাজিম উদ্দীন চাকরিতে ঢোকার পর শুরু করেছেন চার তলাবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণের কাজ। তিন ইউনিটের এই বিশাল বিল্ডিংয়ের প্রতিটি তলা ২৯০০ স্কয়ারফিটের। বাড়িটি নির্মাণে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে পঞ্চাশ লক্ষাধিক টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ টাকা।

বাড়িটি যৌথ মালিকানার দাবি করা হলেও নাজিম ও তার স্ত্রীর বক্তব্যে রয়েছে গোঁজামিলের গন্ধ। এলাকাবাসীর ধারণা, অবৈধ আয় প্রকাশ্যে না আনতেই ফাঁদা হয়েছে যৌথমালিকানার গল্প।

মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে অমানুষিক নির্যাতনের নেতৃত্বদানকারী কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব) নাজিম উদ্দীনের বাড়ি যশোরের মণিরামপুরে।

সোমবার (১৬ মার্চ) সকালে এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শৈশব থেকেই তিনি নানাবাড়ি মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের কাশিপুর কাঁঠালতলা গ্রামে বসবাস করেন। বাবা নেছার আলী দিনমজুর ও মা মাজেদা বেগম গৃহপরিচারিকার কাজ করেই লেখাপড়া শিখিয়েছেন নাজিমকে। তাদের বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চাননি।

তবে কাশীপুর এলাকার বাসিন্দা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সাবেক কর্মী মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল বারী ও তার স্ত্রী জানান, নেছার আলীর একসময় টালির ভাটায় দিনমজুর দিতেন। দুই সন্তানের মধ্যে নাজিম বড়। অপর সন্তানটি মেয়ে, তিনি স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন। তার স্বামী সচিবালয়ে চাকরি করেন।

তিনি আরও বলেন, নাজিমদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার বাবা-মা খুব কষ্ট করে তাকে পড়ালেখা শিখিয়েছে।

৩৩তম বিসিএস ক্যাডারে ২০১৪ সালে চাকরিতে জয়েন করেন নাজিম উদ্দিন। এরআগে তিনি এক্সিম ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন বছর দেড়েক। প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হওয়ার মাসতিনেক পর নাজিমের বিয়ে হয় ভগবানপাড়ার বাসিন্দা সাবেক প্রধানশিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের চতুর্থ মেয়ে সাবিনা সুলতানার সঙ্গে। ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাকরি পাবার পর দিনবদল শুরু হয় নাজিমের। তিনবছর আগে মামা বাড়ির আড়াই শতক জমির উপর নির্মাণ করেন একতলা বাড়ি। এ বাড়িতেই তার স্ত্রী, সন্তান ও মা থাকেন। সুসজ্জিত এ সিসিটিভিযুক্ত। চারটি ক্যামেরা রয়েছে তাতে।

এছাড়া মণিরামপুর পৌরসভার ভগবানপাড়ায় ৮ শতক জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি চারতলা বিল্ডিং। তিন ইউনিটের এই সুবিশাল বিল্ডিংয়ের প্রতিটি তলা ২৯০০ স্কয়ারফিটের।

এ বাড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে নাজিমের স্ত্রী সাবিনা সুলতানা বলেন, ভগবানপাড়ার ওই জমিটি আমার বাবা আমাকে ও আমার একবোনকে দিয়েছেন। ওইবোনের স্বামী আমেরিকাপ্রবাসী। তিনি ও আমরা বাড়িটি যৌথভাবে করছি। নির্মাণকাজ এখনও শেষ হতে অনেক দেরি।

অবশ্য আরডিসি নাজিম উদ্দিন বলেন, জমিটি আমার আমেরিকা প্রবাসী ভায়রাভাইয়ের (শ্যালিকার স্বামী) টাকায় কেনা। এই বাড়ির মালিকানা তার ৭০ শতাংশ আর আমার ৩০ শতাংশ। বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করতে সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্যে আবেদন করেছেন বলেও জানান।

তিনি আরও বলেন, আমি আরিফ ভাইকে মারিনি। আমাদের যে শাস্তি হওয়ার তা হয়েছে। আমাদের যাদের নাম এসেছে ওই ঘটনায়, তাদের সকলকে ওএসডি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনও সংবাদ না প্রকাশ করার জন্যে অনুরোধ করেন তিনি।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন জানান, নাজিম সরকারি কর্মকর্তা। আবারও ক্ষমতাশালী হয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসবেন। ফলে তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে বিপদ অনিবার্য।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নাজিম উদ্দীন,বাড়ি,কুড়িগ্রাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close