বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

যশোরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে দেব প্রসাদ সাহা নামে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। বিচারক সাইফুদ্দিন হুসাইন আগামী ১৯ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।

গ্রেফতার দেব প্রসাদ সাহা খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার সুরেন্দ্র নাথ সাহার ছেলে। গ্রেফতার ও রিমান্ড আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল পোর্ট থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান।

থানা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামি দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কনস্টবল ছিলেন। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বিপি নম্বর ৭৫৯৮০৫১১৯৮ ও কনস্টেবল নম্বর ৭০৩। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভারতের অনেকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যে কারণে তিনি যখন তখন নোম্যান্স ল্যান্ড অতিক্রম করে ভারতে যাওয়া আসা করতেন।

ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারি আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সাথে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুইজন বেনাপোলে মাঝে মধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুইজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন।

২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি পেনড্রাইভ নোম্যান্সল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করে। পনের দিন পর আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আবারো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করে দেব প্রসাদ সাহা।

এদিকে, গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র‌্যাবের হাতে সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিন আটক হন। এসময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয় এবং ভারতের কাছে তথ্য পাচারের বেশ কিছু তথ্য দেন।

পরে বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আরেফের সাথে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।

ফলে সেনা সদস্য শাহনেওয়াজ ও অফিস সহকারী আবু হানজালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের বিষয়টিও দেব প্রসাদ স্বীকার করেছে মর্মে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সে কারণে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য দেব প্রসাদ সাহাকে আটকের পর মামলা দিয়ে ১০দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পুলিশ সদস্য,তথ্য পাচার,গ্রেফতার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close