চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২১ অক্টোবর, ২০১৯

চট্টগ্রামে বাবা-মেয়ের লাশ : পরকীয়া দেখে ফেলায় সন্তান-স্বামী খুন

মা হাছিনা বেগমের (৩০) পরকীয়া সম্পর্ক দেখে ফেলায় নিজ মায়ের হাতেই প্রাণ গেল চার বছরের ছোট্ট শিশু ফাতেমার। পাশের বাড়ির মাইনুদ্দিনের (৪৫) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ায় হাছিনা বেগম। দুজনের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় হাছিনা তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে নিজের শিশুকন্যাকে খুন করে। পরে স্বামী বাসায় এলে আচমকা ঝাপটিয়ে ধরে কাবু করে একইভাবে তাকেও খুন করা হয়।

বন্দর থানায় আটক নিহত আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা বেগম জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।

গতকাল রোববার নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের কথা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জানানো হয়, বাবা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মা হাছিনা বেগম ও তার প্রেমিক মাইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, ‘পাশের বাসার মাইনুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মা হাছিনা বেগমের অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলে শিশু ফাতেমা খাতুন। বাবা বাসায় এলে এ সম্পর্কের কথা বলে দেবে বললে ওই শিশুকে হত্যা করে মা হাছিনা বেগম। পরে মাইনুদ্দিন ও হাছিনা বেগম মিলে স্বামী আবু তাহেরকেও হত্যা করে। এ ঘটনার পর পালিয়ে থাকা মাইনুদ্দিনকে নোয়াখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়।’

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ‘ঘটনার দিন শনিবার সকালে আবু তাহের কাজে বের হলে তার স্ত্রী হাছিনা ও প্রেমিক মাইনুদ্দিন অবৈধ মেলামেশায় জড়ায়। তখনই এ ঘটনা দেখে ফেলে শিশুকন্যা ফাতেমা।’

এর আগে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে নগরের বন্দর থানার নিমতলা মোড়ে শাহআলমের ভবনের নিচতলার বাসা থেকে বাবা-মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, হত্যা করার সময় মাইনুদ্দীন শিশু ফাতেমার হাত-পা চেপে ধরে এবং হাছিনা বেগম নিজ কন্যা ফাতেমার গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ যেন এসে কেউ না দেখে তার জন্য কাপড় দিয়ে খাটের ওপর ঢেকে রাখে। এরই মধ্যে হাছিনা বেগমের স্বামী আবু তাহের ঘরে ঢুকলে মাইনুদ্দীন ও হাছিনা বেগম ঝাপটিয়ে ধরে আবু তাহেরকে। তারপর তার গলায় রশি পেঁছিয়ে শ্বাসরোধ করে পরে পেটে ও মাথায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পরই আসামি মাইনুদ্দীন পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে নোয়াখালী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আবু তাহেরের বড় ভাই মো. নুর আলম বাদী হয়ে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেন। আবু তাহের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন চরঘাটা গ্রামের মৃত মো. মোস্তফার ছেলে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চট্টগ্রাম,সন্তানকে হত্যা,পরকীয়া,হত্যা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close