মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি

  ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

মনোহরদীতে কলেজ ছাত্রসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম

নরসিংদীর মনোহরদীতে দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসে কলেজ ছাত্রসহ তিনজনকে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করেছে সেনাবাহিনীতে কর্মরত সার্জেন্ট নুরুল ইসলাম রেখা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের চন্ডিতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- আতুশাল গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন, আলফাজ উদ্দিনের ছেলে মামুন মিয়া ও শাহাবুদ্দিনের ছেলে আল আমীন। আহতদের মধ্যে মামুনের দুই হাতের পাঁচ আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন, আল আমিনের এক কান বিচ্ছিন্ন এবং মনির হোসেনের নাক ও চোখ কেটে যায়। বর্তমানে আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ ও আহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে আতুশাল গ্রামের মফিজ উদ্দিনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মনির হোসেন মোটরসাইকেলে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। চন্ডিতলা মোড় এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ অসাবধানতাবশত একই গ্রামের বিতান মিয়ার পায়ের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেলটি যায়। এ সময় বিতান মিয়া মোটরসাইকেল চালক মনির হোসেনের গতিরোধ করে প্রথমে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন। মনির এসবের প্রতিবাদ জানালে বিতান ও তার সঙ্গে থাকা সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট নূরুল ইসলাম রেখা, হেরেম উল্লাহ, আখের, আব্দুল বাতেন, কুদ্দুস মিয়া, মিজানসহ ১০-১২ জন মিলে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গাছের ডাল দিয়ে মনিরকে বেদম মারপিট করে আহত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়।

মনির হোসেন বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে ঘটনা সম্পর্কে জানায়। পরে তার মামাতো ভাই আল আমিন ও মামুন মিয়া মনির হোসেনকে সাথে নিয়ে চন্ডিতলা মোড়ে গিয়ে সার্জেন্ট নূরুল ইসলাম রেখা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে মারপিটের কারণ জিজ্ঞেস করলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সার্জেন্ট নূরুল ইসলামের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের মাথায় কোপ দেয়। এসময় মামুন দু’হাত দিয়ে আঘাত ঠেকাতে গেলে তার দু’হাতের পাঁচটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় মামুনকে বাচাতে আল আমীন ও মনির এগিয়ে এলে আল আমীনের মাথায়ও আঘাত করার চেষ্টা করলে তার ডান পাশের কানটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং মনিরের নাক ও বাম চোখ মারাত্মকভাবে জখম হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় তারা মাটিতে পড়ে থাকলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের স্বজনরা খবর পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখান থেকে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মুমূর্ষু অবস্থায় মামুনকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। এ ঘটনায় আহত আল আমীনের বাবা শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে মনোহরদী থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সার্জেন্ট নূরুল ইসলাম রেখা বলেন, ‘মারামারির সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। এলাকার একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, কলেজ ছাত্রসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

পিডিএসও/এআই

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close