বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি (নাটোর)

  ৩০ জুন, ২০১৮

পরকীয়া ও টাকার জন্য শান্তকে খুন করে বন্ধুরা

আদালতে স্বীকারোক্তি

বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেম নিয়ে বিরোধ ও ব্যাংকে থাকা টাকা হাতিয়ে নিতেই পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে ও গলা কেটে সান্তাহার আলী ওরফে শান্ত শেখকে হত্যা করে তারই পাঁচ বন্ধু ও এক বন্ধুর শ্যালক। হত্যার আগে কাপড় লন্ড্রী করার ইস্ত্রি মেশিন দিয়ে বুক ও নাভীতে ছ্যাকা দেয় তারা।

শনিবার এ ঘটনায় আটক জসীম উদ্দিন, আব্দুল মতিন ও নয়ন নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. খোরশেদ আলমের কাছে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) ইন্সপেক্টর সৈকত হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মামুন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন। নিহত শান্ত জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার গড়মাটি গ্রামের মামুদ আলী শেখ জামালের ছেলে।

জবানবন্দি সুত্রে জানা যায়, গড়মাটি গ্রামের শান্তর ঘনিষ্ঠ বন্ধু একই গ্রামের নয়ন, রুবেল, মিঠুন, জসীম ও এশারত। কিছুদিন যাবৎ এশারত তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের সাথে শান্তর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে মর্মে সন্দেহ করে আসছিল। তারই জের ধরে এশারত প্রতিশোধ নিতে গোপনে শান্তকে হত্যা ও ব্যাংকে থাকা তার তামাক বিক্রির ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য অপর বন্ধুদের সাথে পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী নয়ন শান্তকে ব্যবসায় লগ্নি করার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে বলে।

পরামর্শ অনযায়ী ২৪ মে শান্ত সোনালী ব্যাংক বড়াইগ্রাম (বনপাড়া) শাখা থেকে ৮০ হাজার টাকা উঠিয়ে রাতে নয়নের সঙ্গে টাকা নিয়ে এশারতের বাড়িতে যায়। সেখানে এশরাত ছাড়াও নয়ন, রুবেল, মিঠুন, জসীমসহ এশারতের শ্যালক ধানাইদহ গ্রামের আব্দুল মতিন উপস্থিত ছিল। পরে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে শান্তর কাছে থাকা টাকা কেড়ে নিয়ে আকস্মিক গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে সবাই মিলে এলোপাতাড়ি পেটায়। এ সময় কাপড় লন্ড্রী করার গরম ইস্ত্রি মেশিন দিয়ে শান্তর বুক ও নাভীতে ছ্যাঁকা দেয় তারা। ঘটনার সময় পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী মমতাজ বেগম জেগে উঠলে এশারত ঘরের বাইরে থেকে দরজায় ছিটকানি লাগিয়ে তাকে আটকে রাখে। পরে বাড়ির পেছনের ডোবার পাশে নিয়ে শান্তকে সবাই মিলে ধরে রাখে এবং এশারত ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে জবাই করে হত্যা করে। এরপর বড় পলিথিনের বস্তায় লাশটি ভরে তামাকের জমিতে ফেলে রেখে আসে। ঘটনার দুইদিন পর রাখালেরা বিলে মহিষ চড়াতে গিয়ে সেখানে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে। হত্যার আগে শান্তর চুরি যাওয়া একটি চেকের পাতায় জোর করে স্বাক্ষর নেয় তারা।

এদিকে, লাশ উদ্ধারের পরদিন রোববার পাবনার ফরিদপুর শাখা সোনালী ব্যাংক থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আরো ১৫ হাজার টাকা তুলে নেয় তারা। শান্ত হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই পাষাণ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদসহ ওসি তদন্ত সৈকত হোসেনের সহযোগিতায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মামুন মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের পাশাপাশি তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে জড়িত এশারতসহ পাঁচজনকে আটক করেন। এছাড়া এ ঘটনার একমাত্র পলাতক আসামি মিঠুনকেও আটকের চেষ্টা চলছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হত্যা,নাটোর,পরকীয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist