লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ২১ জুন, ২০১৮

চোরাই পথে আসছে গরু : কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে দেশ

লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে প্রতিনিয়ত ভারতীয় গরু দেশে আসছে। চোরাচালানকারী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যরাসহ সবাই মিলে গরু চোরাচালান নিয়ে তৈরি করেছে বিশাল সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট দিয়ে চলছে জমজমাট ভারতীয় গরুর ব্যবসা। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এতে সরকার প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

সুত্র জানায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গেন্দুকড়ি, আমঝোল, ঘুটিয়ামঙ্গল, বনচৌকি, সিঙ্গিমারী পকেট ও কানীপাড়া, বড়খাতা, ভেলাগুড়ি, ঠাংঝাড়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আসছে। সব চেয়ে বেশি ভারতীয় গরু আসছে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা সীমান্ত দিয়ে। ওই সীমান্তে করিডোর ছাড়া গরু পারাপারের অবৈধ ব্যবসা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বৈধতা পেয়েছে। নিয়ম অনুয়ীয় ভারত থেকে গরু আনতে গেলে করিডোর করতে হবে। এ জন্য জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ইসলামপুরে একটি করিডোর স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু গোটা সীমান্তে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করায় এসব ভারতীয গরু কোন করিডোর করা হচ্ছে না। প্রতি গরু করিডোর করা হলে সরকার ৫০০ টাকা রাজস্ব পায়।

হাতীবান্ধা উপজেলার আমঝোল এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা নাম না প্রকাশ শর্তে জানান, করিডোর না করে গরু প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র কথিত লাইনম্যানকে ২ শত টাকা, পুলিশের কথিত লাইনম্যানকে ৬০ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ৬০ টাকা, আনসার ভিডিপি’কে ১০ টাকা করে দিতে হয়। বিজিবি সদস্যরা রাতে এসে গরু হিসাব করে যায়। পরে তাদের লাইনম্যান এসে টাকা আদায় করে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ আদায়ের টাকা অংশ ভেদে লাইনম্যানের মাধ্যমে চলে যায় সিন্ডিকেটের সদস্যদের পকেটে। ওই সব সীমান্ত গুলো দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ শত করে ভারতীয় গরু অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। করিডোর না হওয়ায় এতে প্রতি মাসে সরকার প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

খোজঁ খবর নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ ও বিজিবি’র লাইনম্যান হিসাবে খ্যাত গোতামারী এলাকার একজন ইউ-পি সদস্য ও একজন আনসার সদস্যসহ কয়েকজন এই কমিশনের টাকা উত্তোলন করেন।

হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতিয়ার রহমান ও আনসারের গোতামারী ইউনিয়ন কমান্ডার যাদু মিয়া বলেন, এ সীমান্তে যদি করিডোর স্থাপন করা হয়, তাহলে সরকার প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পাবে।

বিজিবি’র লালমনিরহাট ক্যাম্পের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল গোলাম মোর্শেদ জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানান, জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুলিশ চোরাচালান রোধে কাজ করে যাচ্ছে। তবে তিনি অবৈধ পথে আসা ভারতীয় গরুর বিষয়টি বিজিবি দেখেন বলে জানান।

পিডিএসও/রানা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজস্ব,চোরাই পথে আসছে গরু
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist