জার্মান তরুণীর সর্বস্ব ছিনতায়
বাংলাদেশে বেড়াতে আসা এক জার্মান তরুণীর সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তার নাম সুইন্ডে উইদারহোল্ড। গত বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, ছিনতাইকারীরা তাঁর ল্যাপটপের ব্যাগটি টান মেরে নিয়ে যায়। সব হারিয়ে শুক্রবার ভোরে কাঁদতে কাঁদতে ঢাকা ছেড়েছেন সুইন্ডে। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেছেন সুইন্ডে। তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই দিন ভোরবেলায় এলিফ্যান্ট রোডে নিজের অস্থায়ী আবাসে রিকশায় করে যাওয়ার সময় একটি সাদা গাড়ি থেকে এক ব্যক্তি তার ব্যাকপ্যাকটি টান মেরে নিয়ে যায়। ওই ব্যাগে তার ল্যাপটপ, ক্যামেরা, ক্রেডিট কার্ড এবং তার দুটি হার্ডডিস্কসহ অন্যান্য জিনিস ছিল।
সুইন্ডের বন্ধু শশাঙ্ক সাহা বলেন, গত জানুয়ারিতে ধানমন্ডির পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে ফটোগ্রাফি কোর্স করতে ঢাকায় আসেন সুইন্ডে। তিনি চট্টগ্রামে জাহাজভাঙা শিল্প, সুন্দরবন, কুয়াকাটাসহ অনেক জায়গায় প্রচুর ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিগুলো বিভিন্ন বন্ধুর কম্পিউটারে জমা ছিল। বুধবার রাতে শংকর বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক বন্ধুর বাড়িতে অন্য বন্ধুসহ রাতে থেকে তিনি সব ছবি তাঁর হার্ডডিস্কে স্থানান্তর করেন। ভোরবেলা এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালের অস্থায়ী আবাসে ফিরতে তিনি একটি রিকশা ভাড়া করেন। রিকশাটি জিগাতলা পার হয়ে সীমান্ত স্কয়ারের ফটকে আসামাত্র একটি সাদা গাড়ি থেকে তার ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে যায়।
গাড়ির নম্বরপ্লেট বাংলায় থাকায় তিনি সেটি বুঝতে পারেননি। রিকশাচালকও সেটি খেয়াল করেননি। এ ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন সুইন্ডে। শশাঙ্ক বলেন, সুইন্ডে তার বন্ধুদের জানিয়েছেন, তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার দুটি হার্ডডিস্ক। দীর্ঘ সময় কষ্ট করে তোলা ছবি এতে রয়েছে। এ দুটি হার্ডডিস্কের জন্য বৃহস্পতিবার সারা দিনই কেঁদেছেন প্রায় অর্ধেক পৃথিবী চষে বেড়ানো এই নারী। তাকে কিছু খাওয়ানোও যায়নি। শুক্রবার ভোরবেলা বন্ধুরা তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে আসেন।
তবে এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা পুলিশ এখনো শনাক্ত করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম। আজ সোমবার তিনি বলেন, তদন্ত চলছে। আমরা চেষ্টা করছি।
এদিকে সুইন্ডে তার ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, একটি ঘটনা পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণে অভিজ্ঞতাটি কালো মেঘে ঢেকে দিল। না, এটা (বাংলাদেশ) ভ্রমণের জন্য নিরাপদ নয়। একা ভ্রমণ না করাই ভালো।...আমি কেবল একটি কথাই বলতে পারি, দেখে-শুনে চলো, নিজের ক্ষেত্রে সাবধানে থেকো।...আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি বাংলাদেশ ছাড়ছি।পিডিএসও/মুস্তাফিজ