reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ জুন, ২০১৮

নায়িকাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সেই সারোয়ার

জিএম ছারোয়ার ও নায়িকা সিলভিয়া আজমী চাঁদনী

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামানের নির্দেশে চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পাওয়া ইয়াবা কারবারি সেই জিএম ছারোয়ারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারের স্থানীয় সূত্র জানায়, ইয়াবা কারবারের পাশাপাশি একসঙ্গে সিনেমার একাধিক নায়িকা, মডেল নিয়ে নিয়মিত কক্সবাজারে যাতায়াত করতেন জিএম ছারোয়ার। ইয়াবার আসরে নায়িকাসহ আটকও হয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া কক্সবাজার রামুর মিঠাইছড়ি ইউনিয়নের চান্দেরগাঁও এলাকায় বেসরকারিভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যামিউজমেন্ট ক্লাব’ নামে চলচ্চিত্র নগরী নির্মাণের নামে ৭ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎকারীদের অন্যতম হোতা তিনি। প্রতারিত গ্রাহকদের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল অ্যামিউজমেন্ট ক্লাব সুরক্ষা কমিটি ২০১৬ সালের ১৫ মে কেরানীগঞ্জে এসে তার বাড়ি ঘেরাও করে।

কক্সবাজার পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর কলাতলীর বে-ভিউ আবাসিক হোটেলে ইয়াবার আসর থেকে নায়িকা সিলভিয়া আজমী চাঁদনী (২০০৭ সালে বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরী), জিএম ছারোয়ারসহ চারজনকে আটক করে র‌্যাব। এর আগে ২০১০ সালে চান্দেরগাঁওয়ে চলচ্চিত্র নগরী গড়ার নামে জিএম ছারোয়ার ও রাজধানীর কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন প্রতারণা শুরু করেন। ডেসটিনির মতো অংশীদারত্বের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজারের ৭ হাজার গ্রাহক থেকে ১০-৫০ হাজার টাকা করে অর্থ নেয় এই সিন্ডিকেট। ওই দলে যোগ দেন কক্সবাজারের জিএম ফেরদৌস নামে আরেকজন। একসময় কক্সবাজার এস আলম বাসের কাউন্টারম্যান হিসেবে কাজ করতেন এই ফেরদৌস। এখন তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক।

সূত্র জানায়, ক্লাব নির্মাণের নামে ২০১২ সাল থেকে টানা দুই বছর কলাতলীর নিটল বে রিসোর্টের দুইটি ফ্লোর ভাড়া নেন জিএম ছারোয়ার। ওই হোটেলে ঢাকাইয়া দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির নায়িকা-মডেলদের নিয়মিত জড়ো করে ইয়াবা ও গানের আসর বসাতেন। এতে কক্সবাজার, ঢাকা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশসহ সরকারি কিছু কর্মকর্তা এসে মনোরঞ্জন করতেন। আবার মাঝে মধ্যে তাদের প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে সাগরপাড়ে নাটক-সিনেমার শ্যুটিং চলত।

ওয়ান-ইলেভেনের সময় অবৈধ অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে এবং পুরান ঢাকার আহমেদ কমিশনার হত্যা মামলায় ২০১০ সালে ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নাজিমউদ্দিন চেয়ারম্যান ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মারা যান। নাজিম চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর ইয়াবা কারবার চালিয়ে যান জিএম ছারোয়ার। চলচ্চিত্র-ক্লাবের নামে কক্সবাজার থেকে পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক ইয়াবা কারবারের রুট তৈরি করে ফেলে তার সিন্ডিকেট। নায়িকা-মডেলদের দিয়ে সরবরাহ করা হতো ঘাতক এই ট্যাবলেট। তবে জিএম ছারোয়ারের সঙ্গে বড় কর্মকর্তাদের যাতায়াত থাকায় মাঠ পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে অভিযান পরিচালনার সাহস পেতেন না। রামু থানার ওসি লিয়াকত আলী দুঃসাহস দেখিয়ে তার এলাকায় জিএম ছারোয়ারের ইয়াবার চালান আটক এবং তাকে মামলার আসামি করে বিপাকে পড়েন।

আর ডিআইজি ও জিএম ছারোয়ারের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকায় ইয়াবার মামলায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন ডিআইজি। জিএম ছারোয়ারকে আসামি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামান তার অধীনস্থ ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করেন এবং ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেন। ইয়াবা কারবারিকে বাঁচাতে ডিআইজির এমন ভূমিকায় কক্সবাজার বা চট্টগ্রাম পুলিশের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জিএম ছারোয়ারের বক্তব্য নিতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার ফোন খোলা পাওয়া যায়নি।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সারোয়ার,নায়িকাসহ,গ্রেপ্তার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist