reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ মে, ২০১৮

খোঁজ নেই কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের

সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে কক্সবাজারে এপর্যন্ত চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। তবে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তারা বলছেন, পুলিশের খাতায় পলাতক হলেও মাদক ব্যবসায়ীরা এতদিন প্রকাশ্যেই ঘোরাফেরা করতো। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রশাসন তৎপর হওয়ায় তারা আত্মগোপনে চলে গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের শীলবনিয়া পাড়ার হাজি সাইফুল করিম, টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদের আবদুর শুক্কুর, চৌধুরী পাড়ার মং মং ওরফে মমসী, সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার মো. একরাম হোসেন, নাজিরপাড়ার সৈয়দ হোসেন মেম্বার, হ্নীলা ইউনিয়ন পশ্চিমের লেদার মো. নুরুল হুদা, পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার মুজিবুর রহমানের নাম প্রশাসনের প্রত্যেকটি তালিকায় রয়েছে। এছাড়া, তালিকায় সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যদের পরিবারের লোকজন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের অসাধু কর্মকতাসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের নাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, দেশের শীর্ষ ‘ইয়াবা ডন’ হিসেবে পরিচিত হাজী সাইফুল করিম ও আবদুর শুকুর মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর পালিয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহ আগেও টেকনাফে তাদের বিচরণ ছিল। এখন তাদের এলাকায় দেখা যায় না। এলাকাবাসীর ধারণা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে এদের কেউ মালয়েশিয়া বা দুবাই, আবার কেউ মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে পালিয়ে যায়। তাদের প্রত্যেকের ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফে গাড়ি-বাড়ি-ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, নুরুল হুদা ও মোহাম্মদ একরাম হোসেন ছিলেন গাড়ির হেলপার ও চালক। এখন তারা বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক। তাদেরও রয়েছে একাধিক বাড়ি, গাড়ি, জমিসহ অঢেল সম্পদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় তাদের নাম শীর্ষ স্থানে রয়েছে। পাঁচ বছর আগেও তারা কর্মহীন অবস্থায় এলাকায় বেকার ঘুরতো।এখন নতুন মডেলের দামি করে চলাফেরা করে তারা। তাদের বসতবাড়িতে রাতারাতি গড়ে তুলেছে বিলাসবহুল বাড়ি।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, মো. একরাম এলাকায় প্রচুর আবাদি জমিও কিনেছে। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা চোরাচালানের মামলাও রয়েছে। প্রকাশ্যে এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও পুলিশের খাতায় তারা সবাই পলাতক আসামি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের গতবারের (২০১৭) করা ইয়াবা কারবারিদের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সাত জনের মধ্যে তিন নম্বর গডফাদার মং মং সেন রাখাইন ওরফে মমসী। সে ইয়াবা ও চোরাই স্বর্ণসহ পুলিশ ও বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল। টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ায় রয়েছে তার বিলাসবহুল বাড়ি। মমসী মিয়ানমারের এপার-ওপারে হরেক রকমের বৈধ-অবৈধ ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

এলাকাবাসী জানান, মুজিব ও সৈয়দ হোসেন ইয়াবা ব্যবসা করে অল্প সময়ে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে। তাদেরও বিলাস বহুল বাড়ি রয়েছে। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে এসব ইয়াবা গডফাদাররা এলাকায় চলাফেরা করলেও তাদের কিছু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

টেকনাফ থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘ইয়াবার গডফাদাররা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিচরণের বিষয়টি ঠিক নয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফে নেই। টেকনাফে একদিনের জন্য এলেও তাদের অবশ্যই পুলিশের হাতে ধরা পড়ার কথা। কারণ, পুলিশ সব সময় এসব ইয়াবা কারবারিদের ধরতে প্রস্তুত।’

র‌্যাব কক্সবাজারের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রুহুল আমিন বলেন,‘আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘শুধু এখন নয়, প্রতিনিয়ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। টেকনাফে শীর্ষ যে কজন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু, বরাবরের মতো পুলিশের হাত ফসকে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। চলমান অভিযানে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খোঁজ,কক্সবাজার,ইয়াবা ব্যবসায়ী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist