বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটে গণপরিবহনে ডাকাতি,আহত ৪
ঢাকা থেকে বাগেরহাটের শরণখোলাগামী মেঘনা পরিবহনের একটি গাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। এতে গাড়ির চালক, সুপারভাইজারসহ চারজন আহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে জেলার সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন, গাড়ির চালক রাজু মল্লিক (২৬), সুপারভাইজার কামরুল তালুকদার (৩০) যাত্রী রাহাত হোসেন (২২) ও ইমরান হাওলাদার (১৫) কে রাতেই বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সুপারভাইজার কামরুল তালুকদার (৩০) কে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কামরুল তালুকদার বলেন, মেঘনা পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-৩৯৪৯নং গাড়িটি ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে শরণখোলার রায়েন্দা যাচ্ছিলাম। রাত ২টার দিকে বাগেরহাটের সাইনবোর্ড পৌছালে যাত্রী বেশে থাকা বাসের মধ্যে ডাকাত দলের ৫ সদস্য বাসের গেটে এসে আমাকে গেট খুলতে বলে। গেট খোলার সাথে সাথে আমাকে এলোপাথারী ভাবে মারপিট ও ধারালো অস্ত্রদিয়ে কোপাতে শুরু করে। আমার কাছে থাকা ১৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে চালককেও মারধর করে। অস্ত্রের মুখে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, স্বর্ণালোঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে সাইনবোর্ড বগি সড়কের দৈবজ্ঞহাটী নামক স্থানে নেমে চলে যায় ডাকাতেরা।
মেঘনা পরিবহনের মালিক লিটু শরীফ মোস্তফা জানান, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া আমার গাড়িতে টিকিট ছাড়া কোন যাত্রি ছিলনা। রাজধানীর জনপদের মোড় থেকে একসাথে ৫জন যাত্রী টিকিক কেটে ওঠে গাড়িতে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঐ ৫জনই এ ডাকাতি করেছে। এবিষয়ে আমি পুলিশকে অবহিত করেছি। তবে তাদের কোন তৎপরতা আমার চোখে পরে নেই বলে অভিযোগ করে লিটু। তিনি আরও জানান, গাড়ির চালক রাজু সুস্থ্য আছেন। সে তার বাড়িতেই আছে। সুপারভাইজার কামরুল তালুকদারকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থপেডিকস) বলেন, কামরুল তালুকদার নামে একজন রোগী এখানে ভর্তি হয়েছে। তার শরীরে চার থেকে ৫টি ধারালো অস্ত্রের কোপের দাগ রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
বাগেরহাটের পুলিশ ডাকাতির ঘটনা স্বীকার করলেও কোন থানার অধীনে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ঠেলাঠেলি চলছে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম বলেন, ডাকাতির ঘটনা মোরেলগঞ্জ থানা এলাকায় ঘটেনি। রাতে পুলিশ টহলে ছিল। এটা ঘটেছে সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়কের কচুয়া থানা এলাকার উচু ব্রিজের কাছে। কচুয়া থানা পুলিশ ওই এলাকায় দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও তারা ছিল না।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল কবির বলেন, ডাকাতির ঘটনা শুনেছি। এটা কচুয়ার মধ্যে নয়, মোরেলগঞ্জের মধ্যে ঘটেছে। কারণ কচুয়া থানা পুলিশের এএসআই রোকন টহল গাড়ি নিয়ে সাইনবোর্ড থেকে ঢাকার সকল পরিবহনকে মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি বাজার পর্যন্ত পৌছে দিয়েছে। দৈবজ্ঞহাটির পরেই ঘটেছে ডাকাতির ঘটনা।
পিডিএসও/রানা