নিজস্ব প্রতিবেদক
রামু প্রতিনিধি জিসানকে অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকি
দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের কক্সবাজার জেলার রামু প্রতিনিধি দিদারুল আলম জিসানকে অপহরণ করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। হুমকির কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সন্ধ্যা ৬টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মোটর সাইকেল যোগে রামু থেকে মরিচ্যা যাওয়ার পথে জিসানের গতিরোধ করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে জিসানকে মারাত্মক আহত করে তার নিকট থাকা চারটি মোবাইল ফোন, মোটর সাইকেল, ক্যামেরা ও একটি কালো ব্যাগে থাকা নগদ বিয়াল্লিশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাংবাদিক জিসানকে একেবারে খুন করে লাশ বাঁকখালী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া। কিন্তু ভাগ্যের জোরে সেদিন বেঁচে যান জিসান।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে এই হামলা চালানো হয় বলে সেসময় হামলা বিষয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদনও প্রকাশ করে দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ।
এ ঘটনায় রামু’র পূর্ব রাজারকুলের চিহ্নিত ছিনতাইকারী ও ইয়াবা পাচারকারী মোহাম্মদ আলীর পুত্র আবু বক্কর (৩৫), মোহাম্মদ ফারুক (৩২), খালেক মাসুদ (২৯) ও রামু’র অফিসের চর এলাকার আবদুল আজিজ প্রকাশ আজিজ মেম্বার ও তার ছেলে সনি, রামু’র পঞ্চেঘানা সোলতান আহমদের পুত্র রায়হান (২৫), খুনিয়াপালং এলাকার মৃত ফজল করিমের পুত্র মোহাম্মদ আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ ধারায় রামু থানায় জি.আর মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং- ২৬/৩৮২।
মামলা রুজু হওয়ার সাথে সাথে অভিযুক্ত আজিজ মেম্বারের সহযোগিতায় আসামি বক্করের বাড়ির পাশে ৫ ফুট নিচে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখা ছিনতাই হওয়া মোটর সাইকেল এবং বক্করের স্ত্রীর কাছ থেকে ক্যামেরা, মোবাইল এবং ব্যাগ উদ্ধার করে রামু থানার এস.আই সাইদুর রহমান। এমনকি ওসি তদন্ত এস.এম মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এস.আই সাইদুর রহমান আহত সাংবাদিক জিসানকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনেক চেষ্টা করেছেন আসামিদেরকে গ্রেফতার করার জন্য।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আসামিরা যে কোনো মূল্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছে।
জামিন পাওয়ার পর আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জিসানকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু জিসান তাদের সঙ্গে আপসে রাজি না হলে আবারো অপহরণ করে লাশ গুম ও প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা, এমনটাই জানিয়েছেন জিসান।
জিসান বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ০১৮১১৫২৩১৬৫/০১৮৭১২৮৭৩৩৪ এই দুটি নাম্বার থেকে মামলার প্রধান আসামি আবু বক্কর ফোন করে আমাকে বলে, তোরে জান ভিক্ষা দিয়েছিলাম সেদিন। মামলা তুলে নে, নইলে এবার তোরে কেটে ফেলবো। তোরে আর বাঁচাইয়া রাখবো না।
এ বিষয়ে জিসান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বলেও জানান।
এ ব্যাপারে রামু থানার ওসি তদন্ত এস.এম মিজানুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আসামিরা জামিন নিয়ে বাদিকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বিষয়টা আমি জেনেছি। আসামিদের গ্রেপ্তারে আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়েছি। তারা যে হুমকি দিচ্ছে এটা অন্যায়। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিডিএসও/রিহাব