নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮

ভারতে ঢুকলেই ২ ও ৫ টাকা নোটের দ্বিগুণ দাম!

সীমানা পেরিয়ে ভারতে গিয়ে পৌঁছালেই বাংলাদেশি ২ ও ৫ টাকার নতুন চকচকে নোটের দাম হয়ে যাচ্ছে যথাক্রমে ৫ ও ১০ রুপি, এমনকি ভারতীয় মুদ্রার মানে দ্বিগুণেরও বেশি। হেরোইন ও ইয়াবা সেবনের জন্য পাইপ বা ‘পান্নী’ বানানোর কাজে অবাধে ব্যবহারের কারণে মাদকসেবীদের কাছে এই দুই নোটের কদর ও চাহিদা ব্যাপক। এ কারণে বেনাপোল সীমান্তের চোরাইপথ এবং আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে অবাধে পাচার হচ্ছে সরকারি এই দুই নোট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেরোইন ও ইয়াবা আগুনের তাপে গরম করলে তরলে পরিণত হয়। এ সময় ওই তরল পদার্থ থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা ‘পান্নী’ বা বিশেষ ধরনের পাইপের মাধ্যমে সেবন করে থাকে মাদকাসক্তরা। আগে হেরোইন বা ইয়াবা সেবনের পাইপ তৈরিতে সিগারেটের প্যাকেটের ভেতরে থাকা রাঙতা কাগজ ব্যবহার হতো। কিন্তু তার বদলেই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ২ টাকা ও ৫ টাকার নোট।

মাদকসেবীরা বলছেন, অন্য কাগজের পাইপ অল্প তাপেই পুড়ে যায়। একবার নেশা করতে হলে তিন-চারবার পাইপ পাল্টাতে হয়। এই ‘ঝামেলা’ থেকে তাদের মুক্ত করেছে বাংলাদেশি ২ টাকার ও ৫ টাকার নতুন নোট। এসব নোট দিয়ে পাইপ তৈরি করলে একবারেই নেশার কাজ শেষ হয় বলে দাবি মাদকসেবীদের। এই দুই নোট একটু আলাদা ধরনের কাগজে তৈরি। নতুন অবস্থায় এসব নোট সহজে পানিতে ভিজে যায় না এবং গরমে পুড়ে ছাইও হয় না। তাই নেশাখোরদের কাছে বাংলাদেশি ২ টাকা ও ৫ টাকার নোট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, মাদকসেবীদের কাছে এভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই কিছু ভারতীয় অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার লোভে বৈধ ও চোরাইপথে বাংলাদেশে এসে ২ টাকা ও ৫ টাকার নতুন নোট সংগ্রহ করে পাচার করছে। প্রায়ই বিজিবি ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে আটক হচ্ছে পাচারকারীরা। ধরা পড়ছে ২ টাকা ও ৫ টাকার নতুন নোট।

বিজিবি জানিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর বাংলাদেশি ২ টাকার ২৬ হাজার নতুন নোটসহ তাদের হাতে আটক হন নাসিম উদ্দিন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ইকবালপুর এলাকার বাসিন্দা। এরপর ১০ নভেম্বর নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হন কলকাতার আরমান স্ট্রিটের ইউসুফ আলীর ছেলে নাসের উদ্দিন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশি ২ টাকার ৪১ হাজার ৬০০ নতুন নোট।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কাস্টমস তল্লাশি কেন্দ্রে ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন থাকলেও পাসপোর্ট যাত্রীর মাধ্যমে কীভাবে এই টাকা ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার আবদুুল ওয়াহাব বলেন, ‘বাংলাদেশি টাকা অবৈধভাবে পাচার হোক, কোনোভাবেই আমাদের বাহিনী এটা হতে দেবে না। আর এই নোটগুলো কী কাজে ব্যবহার হয়, তা আমার সঠিক জানা নেই।’

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাংলাদেশি টাকা,২ ও ৫ টাকা,ভারত,দুমাদকসেবী,ইয়াবা সেবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist