reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ মার্চ, ২০১৯

আলিমন নেছা মনির ৩ কবিতা

ভালোবাসি তাকে কবিতার ভুলে

আমি ভালোবাসি তাকে মুক্ত বিহঙ্গের মতো

তাই নিজেরই জীবনটাকে তুচ্ছ ভেবে নিয়ে

বারবার ছুটে যাই স্মৃতির উঠোন পেরিয়ে।

মনে করি, আমার অস্তিত্ব আর কল্পনার রেখায়

যাকে সাজিয়ে রেখেছি ফুলদানির রঙিন ফুলে

ভাবতে পারি না কখনো আমি—তাকে যাব ভুলে।

পিয়াল ডেকো না তাকে বাঁশি বাজানোর সুরে

না হলে যে ঘুমাতে পারবে না এই মাটির তলে।

আমি ভালোবাসি এখনো তাকে মান অভিমানে

সাহিত্য কণার অশ্রু পল্লবের পাতাগুলো ভিজে

আমার পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে।

বলবে, ভয় নেই তোমার আমিতো আছি এখানে

যেখানে প্রতিনিয়ত হাজারো অনাহারি বসে কাঁদে।

সেখানে আমার নীলিমা স্বপ্ন দেখায় বাঁচার ছলে

বন্ধু, বল না তোকে ভুলে যাব কোন শক্তির বলে।

কথা রাখলে না

কি অদ্ভুত মানুষ তুমি

কোনদিন আর ফিরলে না।

এতটা মিথ্যুক তুমি

প্রতিদিন আশা দিয়ে রাখলে।

আমার সাথে দেখা করবে

ছায়াবিথী রেস্টুরেন্টার সামনে।

সন্ধ্যা ঠিক সাড়ে ছয়টায়

দাঁড়িয়ে থেকো কিন্তু তুমি।

প্রহর গুনি আমি একাকী

ব্যস্ততা আর ফুরালো না।

চিবুক বেয়ে ঝড়ে আমার

অজস্র নোনতা জলের ধারা।

সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত আসে

শূন্যতায় খাঁ খাঁ করে উড়ে

এলোকেশী চুলের বারান্দা।

খুব বেশি নিষ্ঠুর ছিলে তুমি

স্বভাব অনেকটাই স্বার্থপর।

সময়ে অসময়ে কটু বাক্যে

ফাল্গুনীতেও আসে ক্ষিপ্র ঝড়।

কখনো কি বুঝোনি তুমি

কতটা অস্থির মানুষ আমি।

তোমার সাথে হলে দেখা

ভুলে যাই সব দুঃখ ব্যথা

শুধুই ভাবি তুমি আমার ঘর।

তোমার ক্রোড়ে মুখ লুকিয়ে

গলার কণ্ঠ কাঁদে উচ্চস্বরে

ওগো ছেড়ে যাবে নাতো তুমি।

বলেছো, এত ভাববে না

আরো সহস্র বছর যে আমি

তোমাকে না জ্বালিয়ে মহু

কোনদিনও আর মরবো না।

খুব বিশ্বাস করেছি আমি

আধভাঙা কণ্ঠের শব্দগুলি

দগ্ধ করে যায় বদ্ধ পাঁজরে।

একাকার করে ফাগুন আসে

মনের বিরহ প্রতীক্ষার ছাদে

তুমি কোনদিন আর ফিরলে না।

সুর মূর্ছনাতে কবিতার জন্ম

হঠাৎ আমার কথা শুনে তুমি কাঁদলে কেন আমি বলছি না যে তুমিবিয়েতে সম্মতি দাও।

আকাশ, আজ তোমার মুখ এত গম্ভীর কেন

বলছি না আমি তোমাকে—ভালোবাসতেই হবে।

বলছি না যে আমিতুমি আমাকে উজার করে

সাত রঙে ছেয়ে যাওয়া পৃথিবীর রূপ দেখো।

আমি বলছি নাতোমার অশ্রুকে বিলীন করে

নিখুঁত সুন্দরী ভেবে আমাকে তুমি পাশে রাখো।

আমি চাইছি নাকেউ আমাকে ভালোবাসুক!

রাতের প্রগাঢ় নিস্তব্দতা আর খেয়ালীর ডাকে

ভয়াতুর হুতুম পেঁচা পাখিটার আত্মচিৎকারে

ভয়ে গুটিসুটি মেরে ঘরের কোনে বসে কাঁদব।

তখন কেউ এসে তার যুগল নগ্ন বাহুর ডোরে

বন্দি করে মাথার এলো কেশে হাত বুলিয়ে দিক।

আমি বলছি নাআমাকে কেউ সারাজীবন ধরে

তার টানাপোড়নের বদ্ধ সংসারে আগলে রাখুক।

বিক্ষুব্ধ দিবানিশির নির্লিপ্ত ছিন্ন মলিন চাহনীতে

এই মধ্য বয়সে আমি এখন খুবই বেশি ক্লান্ত।

সারাদিন কর্মব্যস্ত ঝুঁট ঝামেলার ঝাক্কি পেরিয়ে

যখন বাসায় ফিরিবড়ই বিষাদ সুর বাজে মনে।

কারণ তিক্ততার বীণার তারে গেঁথে থাকা ছন্দে

কেউ বলে নাতুমি তাড়াতাড়ি ফিরলে না কেন।

আমি জানি, একাকী শত রাত্রি কাটানোর যন্ত্রণা

অসহায় নারীর দুঃসহ স্বপ্নকে বিষণ্ন করে রাখে।

স্বৈরাচারী বৃষ্টি কবলে পাপী মৃত্যুকেই সে ডাকে,

তবু আমি বলছি নাতুমি সে রাত্রির সঙ্গে এসে

তাড়িত যৌবনের অভিলাসী তৃপ্ততা দান করো।

আমি চাইঅনন্ত একবার হলেও প্রতিদিন তুমি

খোলা বারান্দায় পাতানো কেদারাটাতে বসে

ধোয়া উঠা পেয়ালার পাশের খাতাটা বুকে টেনে

হৃদয়ভরে আমার লেখা কবিতাগুলো আবৃত্তি করো।

তোমার পাগলকরা কণ্ঠস্বরে সুরের মূর্ছনাতে আমি

আবার নতুন করে কোন একটা কবিতার জন্ম দেবো।

আমি চাইকোনদিন আর আমাকে ঘৃণা করো না

নয়তো আস্ত মস্তিষ্কের শরীরকে গিলে খাবে কল্পনা,

বারবার বলবেতোমার মুখটা এত গম্ভীর কেন।

পি​ডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আলিমন নেছা মনি,কবিতা,সাহিত্য
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close