নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ আগস্ট, ২০১৮

আজ বাইশে শ্রাবণ

‘যদি দূরে যাই চলে, তবু মনে রেখো...’

কান্নাভেজা আকাশ বাতাস মাটি ও মন। আর ২২ শ্রাবণ যেন বলে যায়, ‘আমি মৃত্যুর চেয়ে বড়ো এই কথা বলে—যাব আমি চলে। মোর নাম এই বলেই খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক। তবু মনে রেখো, যদি দূরে যাই চলে, তবু মনে রেখো।’ তিনি মনে আছেন থাকবেন চিরকাল। তিনি তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ তার ৭৭তম মহাপ্রয়াণ দিবস। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এইদিন (১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর চতুর্দশ সন্তান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত তার রচনা থেকেই নেওয়া হয়েছে। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় অসামান্য অবদান রেখে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার লেখা ও সুর করা আড়াই হাজারের বেশি গান বাংলা সাহিত্যের অতুলনীয় সম্পদ। চিত্রশিল্পেও তার অবদান অসামান্য।

রবীন্দ্রনাথ বোলপুরের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারা প্রবর্তন করেন। কৃষির উন্নতির জন্য তার প্রতিষ্ঠিত শ্রীনিকেতনও এক যুগান্তকারী প্রতিষ্ঠান।

অবিভক্ত ভারতের কুষ্টিয়া ও শাহজাদপুরে ছিল ঠাকুর পরিবারের বিশাল জমিদারি। তিনি জমিদারি পরিদর্শনের কাজে পূর্ববঙ্গের শাহজাদপুর ও শিলাইদহে দীর্ঘদিন বাস করেন। শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ সপরিবারে বাস করতেন। পদ্মাবক্ষে নৌকায় (বোট হাউসে) অনেক দিন বসবাস করেছেন রবীন্দ্রনাথ। তার অনেক সৃষ্টিকর্মই এই পূর্ববাংলায় রচিত। তিনি পূর্ববাংলার কৃষক সমাজের উন্নতির জন্য অনেক কাজ করেছিলেন এবং কৃষিব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আদি ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমাজ সংস্কারমূলক কাজের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের সুবাদে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। রবীন্দ্রনাথই প্রথম এশিয়াবাসী যিনি এ পুরস্কারে ভূষিত হন। নোবেল পুরস্কারের সমুদয় অর্থ তিনি বিশ্বভারতী ও শ্রীনিকেতনের উন্নয়নে ব্যয় করেন। বাঙালির প্রতিটি আবেগ অনুভবে জড়িয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ।

মৃত্যুর সাত দিন আগেও কবিতা লিখেছেন তিনি। বাইশে শ্রাবণ তার পার্থিব জীবনের সমাপ্তি ঘটলেও বাংলা সাহিত্যে তিনি শ্রেষ্ঠ আসন অধিকার করে আছেন চিরদিনের জন্য।

এদিকে, বিশ্বকবির ৭৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আজ সোমবার বিকেল ৪টায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

এতে ‘আজকের বিশ্বে রবীন্দ্রসৃজনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করবেন নাট্যজন আতার রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জমান। পরে রয়েছে গীতিনৃত্যালেখ্য ‘ওই পোহাইলো তিমির রাতি।’ গীতিনৃত্যালেখ্য পরিবেশন করবে রক্তকরবী ও শুদ্ধ সংগীত চর্চা কেন্দ্র। এ ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি বিকেলে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন দিবসটিতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাইশে শ্রাবণ,বিশ্বকবি,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist